সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর
সরদার পাড়ার চা ব্যবসায়ি ইয়াছিন আলীকে হত্যার
দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক
জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত জাকির হোসেন।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক
হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক রাকিবুল ইসলামের
কাছে তিনি জবানবন্দি দেন।
গ্রেপ্তারকৃত জাকির হোসেন (৪৮) সাতক্ষীরা সদরের আলিপুর গ্রামের বাচ্চু শেখের
ছেলে।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার
তদন্তকারি কর্মকর্তা আজিজুল ফয়সাল তারেক
জানান, গ্রেপ্তারকৃত জাকির হোসেনকে সোমবার
দুপুরে আদালতে হাজির করানো হয়। সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ
বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক রাকিবুল
ইসলামের কাছে সে ইয়াছিন মোল্লাকে হত্যার দায়
স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
দিয়েছে। ২০ হাজার পাওনা টাকার জন্য ইয়াছিনকে
কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে বলে বিচারককে
জানিয়েছে। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো
হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়,পুরাতন সাতক্ষীরার একটি
চায়ের দোকানের মালিক ইয়াসিন আলীর সাথে
জাকির হোসেনের বন্ধুত্ব ছিল। ব্যবসার কথা বলে
ইয়াসিন জাকিরের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার
নেয়। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও টাকা পরিশোধ
না করায় জাকিরের সাথে গত ১৫ দিন আগে
ইয়াসিনের তুমুল ঝগড়া হয়। প্রতিশোধ নিতে হত্যার
ফন্দি আটে জাকির। এরই ধারাবাহিকতায় শহরের
কামালনগর এলাকা থেকে ১৫০ টাকা দিয়ে একটি দা
কিনে রাখে জাকির। গোলযোগপূর্ণ জায়গায়
স্থাপনা নির্মাণে রাজমিস্ত্রির কাজ করার কথা বলে গত ৩০ আগষ্ট
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইয়াসিনকে বাইপাস সংলগ্ন বকচরা
মোড় এলাকায় নিয়ে যেয়ে গল্প করতে থাকে ।
মধ্যরাতে আশেপাশের কেউ না থাকার সুযোগে
ইয়াসিনকে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখমের
একপর্যায়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে
জাকির। পরে দেহ পাশের একটি মাছের ঘেরে, আর মাথা একটি বস্তায় ভরে শহরের
কামালনগরের সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল জলিলের মাছের
ঘেরের দক্ষিণ পাশের বাইপাস সড়কের কালভার্টের
নীচের জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়। পরে সামেক
হাসপাতাল এলাকায় একটি পুকুরে গোসল করে তার
রক্তমাখা জামা ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে যায়। এরপর ৩১ আগষ্ট বুূধবার সকালে পথচারীদের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশ ওই ঘের থেকে মুন্ডু বিহীন ইয়াছিনের লাশ উদ্ধার করে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে
আলিপুরের
নিজ বাড়ি থেকে ঘাতক জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার
করেন র্যাব সদস্যরা।
পরদিন রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাকির হোসেনকে
নিয়ে বাইপাস সড়কে অভিযানে নামেন র্যাব সদস্যরা। তার দেখানো মতে, একটি কালভার্টের নীচ থেকে বস্তায় ভরা ইয়াছিনের বিচ্ছন্ন মাথা আর বাঁকাল এলাকার ওই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামাকাপড় উদ্ধার করা হয়। এরপর র্যাব সদর থানায় আসামীকে সোপর্দ করেন। সোমবার ( ৫ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ আসামী জাকিরকে নিয়ে বাইপাস এলাকার একটি বিচলি গাদা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করে। পরে আদালতে আসামী জাকির হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন