‘ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং ক্যাম্পাস খোলার জন্য যে শর্ত দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া যাবে। আমরা জানি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারী এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে। তাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বাঁধা কোথায়? আমরা চাই অতি শীঘ্রই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হোক।’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচীতে এসব কথা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তরিকুল আলম।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিনের অজুহাতে ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার পায়তার বন্ধের দাবি জানান।
এতে অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক ও দর্শন বিভাগ ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া না হলে আমরা আরো কঠিন আন্দোলনের পথ বেছে নিবো। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে উদ্যোগী হবে।’
ছাত্র অধিকার পরিষদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক রসায়ন ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যখন গার্মেন্টস চলছে, যানবাহন চলছে, রেস্টুরেন্ট-রিসোর্ট চলছে তখন কেনো বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। এখন যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলছে এর মাধ্যমে মূলত রাষ্ট্র বৈষম্যর ব্যবস্থা করছে। গ্রামের যে গরীব মানুষ দু বেলা খেতে পারে না তাদেরকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের নামে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যে শিক্ষা ব্যবস্থা বৈষম্য সৃষ্টি করে সে ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা চাই না।’
ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ৪৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে শুধুমাত্র হতাশা থেকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না থাকায় এটার বড় কারণ। আমরা দেখেছি সারা দেশের শিক্ষকদের সংগঠন বলছে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার কথা। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলছেন হল নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। তাহলে আমরা জানতে চাই শিক্ষা কার্যক্রম চললে কি উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করা সম্ভব না? নাকি ভেবে নেবো অনৈতিক, দুর্নীতিগ্রস্ত কাজ নির্বিঘ্নে পরিচালনা করার জন্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলছেন যে হল নির্মাণ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে। অন্যদিকে প্রকল্প পরিচালক বলছে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারির আগে হলগুলোতে শিক্ষার্থী উঠানো সম্ভব না। শিক্ষার্থীদের অনেকদিনের দাবি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার, অথচ ক্যাম্পাস বন্ধের দেড় বছর পর শুনছি হল নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। এই কথা মূলত প্রমাণ করে শুধুমাত্র করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে আছে এরকম না বরং যে কাজ চলছে সেখানে যে দুর্নীতি চলছে সেই দুর্নীতির ধারা অব্যাহত রাখতেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত বছরের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই বন্ধ দফায় দফায় বাড়িয়ে আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলন করে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন