চালের দাম গত বছর বাড়লেও এক পয়সাও কমেনি। বাইশ দফায় বৃদ্ধি হয়ে ২৯ টাকা কেজির চাল ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও উৎপাদনের ভরা মৌসুমেই নরসিংদীর বাজারে নতুন চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত দুই দিনে নতুন চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ টাকা। বস্তা প্রতি বেড়েছে ১০০ টাকা। এরমধ্যে ব্রি ২৮ ভ্যারাইটির চালের দাম ছিল ৪২ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা। ২৯ ভ্যারাইটির প্রতিকেজি চাল বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা। মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫৪ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়। কাজললতা বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। চালের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকার কোন কার্যকরী ভ‚মিকা পালন করতে পারছে না। যার ফলে চালের বাজার চলে গেছে সিন্ডিকেটের দখলে। গতবছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চালের বাজার চলে যায় সিন্ডিকেটের দখলে। সদস্যরা একের পর এক চালের মূল্য বাড়াতে বাড়াতে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিনা বাধায় ২২ দফা চালের মূল্য বৃদ্ধি করে। ২৯ টাকা কেজির চাল ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে ১০ মাসে ৬৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে, মানুষ গত প্রায় এক বছরাধিককাল ধরে কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা বেশি মূল্য দিয়ে চাল কিনে আসছে। সাধারণ মানুষের আশা ছিল বোরো মৌসুমে ধান ঘরে তোলা হলে চালের দাম কমে আসবে। কিন্তু তাও ঘটেনি। ধান কাটার মৌসুমেও চালের দাম কমেনি।
হঠাৎ চালের মূল্য আবারো বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে খুচরা বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, চালের দাম তারা বাড়ায়নি। তারা বাড়তি মূল্যে কিনে বাড়তি মূল্যে বিক্রি করছে। চালের মূল্য বাড়িয়েছে আড়তদাররা। আড়তদাররা জানিয়েছেন, মিলাররা যে দরে চাল বিক্রি করতে বলে তারাও সেই দামেই চাল বিক্রি করে। আর এভাবেই গত দুই বছর ধরে চালের মূল্য অব্যাহত গতিতে বেড়ে চলছে।
এদিকে স্থানীয় কৃষিবিদদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, চলতি বছর ৪৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমি থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই কোটি পাঁচ লাখ টন। গত বছরের তুলনায় এবছর অতিরিক্ত ১০ লাখ টন বোরো বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
দেশে উৎপাদিত মোট চালের ৫৫ ভাগ আসে বোরো থেকে। চাষিরা জানিয়েছেন, ব্রি ২৮,ও ২৯ ভ্যারাইটির উৎপাদন অর্ধেকের চেয়ে নিচে নেমে গেছে। ফাউন্ডেশন সীড ছাড়া কৃষকের সংগৃহীত বীজ পলিনেটেড হয়ে যাওয়ায় এখন বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মনের বেশি ফলন হয় না। তাছাড়া চলতি বছর বোরো ধানের ফলনে বহু সংখ্যক ধান চিটা হয়ে গেছে। এদের সাথে কথা বলে জানা গেছে কেজিপ্রতি চিটার পরিমাণ দাঁড়াবে কমবেশি ২০০ গ্রাম। ধানের উৎপাদন ঘাটতি দেখেই সিন্ডিকেট হঠাৎ করে চালের মূল্য বাড়াতে শুরু করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন