করোনা ভাইরাসকালিন হিলি স্থলবন্দরে আমদানি রফতানি বন্ধ নিয়ে দুদেশের ব্যবসায়ীদের চিঠি চালাচালি অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখতে ভারতের ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে অনুরোধ করে হিলি স্থলবন্দর কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু ভারতের ব্যবসায়ীরা বিধি নিষেধ মানতে নারাজ। তারা আগের মতোই আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখতে চায়। নচেৎ তারা রফতানি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
হিলি বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানায়, ভারতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সরকারি বিধি নিষেধ অনুযায়ী অল্প পরিমাণ গাড়ি ভারত থেকে নেওয়া, ভারতীয় ট্রাক চালক-হেলপারদের স্বাস্থ্য বিধি মানতে এবং তাদের করোনার সনদপত্র নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করতে চিঠি দিয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ভারতের ব্যবসায়ীরা বিধি নিষেধ মানতে নারাজ এবং বিভিন্ন তালবাহানা করছে।
গত ৫ জুন ভারত হিলি এক্সপোর্টার এন্ড সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন পক্ষ একটি পত্র হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া হয় পত্রে তারা বলেন, ট্রাক ড্রাইভারদের টিকা দেওয়া সম্ভব না, পূর্বের ন্যায় রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে হবে। তানা হলে আগামী ৮ জুন থেকে ভারত থেকে কোন পণ্যবাহী গাড়ি এই বন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে দিবে না।
ভারত হিলি ব্যবসায়ীদের চিঠির প্রেক্ষিতে হিলি বন্দর ব্যবসায়ী তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী ৮ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত স্বল্প পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি চলমান রাখতে হবে এবং আগামী ১১ জুন শুক্রবার বিকেল সাড়ে চার টায় হিলি জিরোপয়েন্টে দুদেশের ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।
হিলি স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল আজিজ জানান, মঙ্গলবার (৮ জুন) ভারতের ব্যবসায়ীদের চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্বল্প পরিসরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রাখতে হবে। পরদিন শুক্রবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর এ আলম বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গতকাল দুপুরে এক আলোচনা সভা উপজেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সংক্রমণ রোধে আগের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি নতুন করে আরও তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো- আমদানিকারক সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট ও বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারী যারা রয়েছে সবার স্থলবন্দরে ঢোকার ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে স্যানিটাইজড হতে হবে। যাতে করে তাদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এজন্য বন্দরের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে বন্দরে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালকদের অবস্থানের জন্য অস্থায়ী শেড নির্মাণ করা হবে। যেখানে ভারতীয় ট্রাক চালকরা বন্দরে পণ্য নিয়ে এসে ট্রাক রেখে ওই স্থানে থাকবে। সেখানে নিরাপত্তা কর্মী পাহারায় থাকবে। তার ট্রাকের মালামাল খালাস হয়ে গেলে সে বের হয়ে ট্রাক নিয়ে পুনরায় ভারতে চলে যাবে। হিলি জিরোপয়েন্ট থেকে শুরু করে বন্দরের গেট পর্যন্ত সড়কে পুলিশের টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে করে ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আসা কোনও চালক ট্রাক থামিয়ে স্থানীয় কোনও দোকান থেকে পণ্য কিনতে না পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন