স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতি বছর রাজধানীর ২২টি স্থানে বসবে কোরবানির পশুর হাট। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে বসবে ১৩টি, উত্তরে বসবে ৯টি। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, এবার অবৈধ কোনো হাট বসতে দেয়া হবে না। যদিও প্রতি বছর এমন ঘোষণার মধ্যেও রাজধানীতে বেশ কয়েকটি স্থানে অবৈধ হাট বসে। শুধু তাই নয়, নির্ধারিত স্থানের বাইরে আবাসিক এলাকা দখল করে হাট বানানো হয়। এতে করে ওই এলাকার মানুষকে ঈদের আগে এক সপ্তাহ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ভুক্তভোগিরা জানান, ইজারার আগ পর্যন্ত হাটের ইজারাদারদের চেহারা থাকে একরকম। ইজারা নেয়ার পর তারা আর কাউকেই তোয়াক্কা করে না। মোবাইল কোর্টের অভিযানের কথা বলা হলেও ঈদের আগে আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। এসব কারণে কোরবানির পশুর হাট মানে একরকম অবধারিত ভোগান্তি বলে মেনেই নিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ১৩টি জায়গা আমরা ইজারা দেওয়ার জন্য নির্ধারণ করেছি। পরিচ্ছন্নতার বিষয় মাথায় নিয়ে আমরা সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় ৯টি পশুর হাট ছাড়াও ৫৪টি ওয়ার্ডের ২৭০টি স্থানে পশু কোরবানির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। পশু কোরবানির জন্য আমরা ৭০০ জন ইমাম ও ১ হাজার কসাইকে প্রশিক্ষণ দেব। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় হাটে ১ লাখ মাস্ক বিতরণ করা হবে।
ঢাকা উত্তরে পশুর হাটের জন্য নির্ধারিত জায়গাগুলো হলো, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর থেকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা পশুর হাট, কাওলা শিয়ালডাঙা সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরখান মৈনারটেক শহিদনগর হাউজিং, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং, মিরপুর-৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, উত্তরা এক নম্বর সেক্টরের ১ ও ২ নম্বর ব্রিজের পার্শ্ববর্তী খালি জায়গা, মোহম্মদপুর বছিলা ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ডিএনসিসির ৪৩ নম্বর আওতাধীন ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন খালি জায়গা।
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণের যে ১৩টি স্থানে পশুর হাট বসবে সেগুলো হলো- শাহজানপুর-খিলগাঁও রেলগেট, লেদার টেকনোলজি কলেজের পাশের মাঠ, পোস্তাগোলা শশ্মান সংলগ্ন মাঠ, মোরাদিয়া বাজার, কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন মাঠ, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবে পাশের মাঠ, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন মাঠ, আফতাব নগর (ইস্টার্ণ হাউজিং মাঠ), আমুলিয়া মডেল টাউনের খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন মাঠ, কদমতলি ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা এবং গোলাপবাগ ডিএসসিসি মার্কেটের পেছনের খালি জায়গা।
দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট বসবে। তবে গত বছর স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো নমুনা চোখে পড়েনি। বরং হাটগুলোতে গাদাগাদি করেই মানুষ গরু দেখতে ভিড় করেছে। বিশেষ করে ঈদের দুদিন আগে থেকে হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা বা মানানোর কোনো পদক্ষেপও দেখা যায়নি। দনিয়া এলাকার বাসিন্দা গুলজার হোসেন বলেন, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন মাঠের নামে হাট ইজারা দেয়া হলেও বাস্তবে এরকম কোনো মাঠ নেই। বরং দনিয়া এলাকার ভিতরে বাসা বাড়ির সামনের জায়গা দখল করে হাট বসানো হয়। শুধু তাই নয়, হাট বসানোর সাথে সাথে প্রধান সড়কও বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন মানুষ আর গাড়ি নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। তাতে জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ও এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। গত বছরও এরকম পরিস্থিতি হয়েছিল। স্থানীয় মাস্তান বাহিনী হাটের নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে এ নিয়ে অভিযোগ করলে উল্টো নাজেহাল হতে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন