করোনা মহামারীর মধ্যেও আসন্ন ঈদ উল আজহায় দক্ষিনাঞ্চলে কোরবানির পশু স্থানীয়ভবেই মিলবে বলে আশা করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। তবে এরপরেও স্বল্প দুরত্বের এলাকা থেকে ইতোমধ্যে গবাদিপশু আনতে শুরু করেছেন পাইকারী ও খুচরা বেপারীরা। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে হাটে গবাদিপশুর সমাগম হতে শুরু করলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্রেতার আনাগোনা ছিল খুবই সিমিত। তবে মঙ্গলবার বরিশাল মহানগরীর স্থায়ী গরুর হাট সহ ঝালকাঠীর সুগন্ধিয়ার হাট ও বানরীপাড়ার গুয়চিত্রার হাটে কিছু ক্রেতা পশুর দর দামের খোজ খবর নিয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলের অন্যন্য হাটেও আনাগোনা ছিল সিমিত।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে,গত বছর করোনা সংকটের মধ্যেও দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় প্রায় ৫ লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। যার প্রায় সিংহভাগই স্থানীয় পশুর দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। এবারো সে ধরনের আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন প্রণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক।
প্রনিসম্পদ অধিদপ্তরে মতে, আসন্ন ঈদ উল আজহায় কোরবনীর লক্ষে দক্ষিণাঞ্চলে খামারিগন প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার ষাড়, মহিষ,বাদল ও বাছুর হৃস্টপুষ্ট করে প্রস্তুত করেছেন। এর বাইরেও প্রায় ২৮ হাজার ছাগল ও দেড় সহশ্রাধীক ভেড়া আসন্ন ঈদ উল আজহায় কোরবানির হাটে তুলতে চাচ্ছেন দক্ষিণাঞ্চলের খামারিগন। সব মিলিয়ে কোরবানির হাটে তোলার জন্য প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার ষাড়, মহিষ,বাদল এবং বাছুর ছাড়াও ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত করা হলেও দক্ষিণাঞ্চলের সাধারন গৃহস্থরা যে আরো প্রায় ৩৪ লাখ গবাদি পশু লালন পালন করছেন তা দিয়েও এ অঞ্চলের কোরবানির পশুর চাহিদার প্রায় পুরোটাই মিটবে। এ আশাবাদ প্রাণিম্পদ অধিদপ্তরের। এ অঞ্চলের গৃহস্থ পর্যায়ে ৩৪ লাখ গবাদিপশুর মধ্যে শংকর জাতের গাভীর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ বলে জানা গেছে।
তবে করোনা মহামারি সংকটে এবার অন লাইনে কোরবানির পশু বিক্রীকে উৎসাহিত করতে চচ্ছে সরকার। এলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির সাথে একযোগ কাজ করছে। দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলাতেও গত ১ জুলাই থেকে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রী কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার কেরবানির পশু বিক্রী শুরু হলেও বিষয়টি নতুন বিধায় খুব দ্রুত তা জনপ্রিয়তা অর্জন সম্ভব নাও হতে পারে বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহল মহল। বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিনই প্রণিসম্পদ মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তর জুম মিটিং করছেন বলেও জানা গেছে। বুধবারও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শম রেজাউল করিম, তথ্য প্রযুক্তি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ হাসান পলক দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার ও প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের সব বিভাগীয় পরিচালকদের সাথে জুম মিটিং করবেন বলে জানা গেছে।
বরিশাল মহানগরীতে ১টি স্থায়ী হাটের বাইরে আরো দুটি অস্থায়ী হটে এবার কোরবানির পশু বিক্রী হবে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলায় অন্তত ৩শ কেরবানির পশুর হাট মিলছে বলে জানা গেছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে তাদের স্ব স্ব এলাকায় পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যপারে সরকার থেকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্র্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর থেকেও প্রতিটি হাটে তাদের কারিগরি টিম কাজ করবে বলেও বিভাগীয় পরিচালক জানিয়েছেন।
তবে গত বছর ঈদ উল আজহার পরেই সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও করোনা সংক্রমন ব্যপাক বিস্তৃতি লাভ করে । সে অভিজ্ঞতার আলোকে এবার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে বিবেচনার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্য বিভাগের দয়িত্বশীল কর্মকর্তাগনও। এবার গত ২১ জুন দক্ষিণাঞ্চলের ১৭৩টি ইউপি নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের রেশ ধরে ইতোমধ্যে দক্ষিনাঞ্চলের সব জেলাতেই করোনা সংক্রমন চুড়ায় উঠেছে। এসব বিচেনায় নিয়েই আসন্ন ঈদ উল আজহার পশুরহাট স্থাপন সহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মনযোগী হবার তাগিদ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন