মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

স্ত্রীর পরকীয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে সৌদি আরবে লাইভে আত্মহত্যা করলো কক্সবাজারের যুবক হাসান

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০২১, ৭:২৩ পিএম

স্ত্রীর বেপরোয়া জীবন যাপন ও পরকীয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে লাইভে আত্মহত্যা করেছে সৌদি প্রবাসী কক্সবাজার পোকখালীর দুই সন্তানের জনক মোঃ হাসান। জানা গেছে, প্রবাসী হাসানের পরিবারের সাথে বনিবনা না হওয়া স্ত্রীকে ঈদগাঁও বাজারের একটি ভাড়া বাসায় রাখা হয়েছিল। আগামী ১০ জুলাই স্ত্রীকে সৌদি আরবে নেয়ার কথা ছিল হাসানের।

নিহত হাসান কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম পোকখালীর মালমুরা পাড়া চুলুবনপাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সৌদি প্রবাসী আব্দুর রহিমের পুত্র। দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত তারা সপরিবারে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। তবে তার দুই ভাই মোঃ আনিস ও মিজানুর রহমান চাচাসহ দেশে রয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, লাইভে আত্মহত্যাকারী হাসানের সাথে ৪/৫ বছর পূর্বে সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয় পাশাপাশি এলাকার জালালাবাদ বাহারছড়ার মৃত মোস্তাকের মেয়ে তাছমিন আক্তারের। তাদের সংসারে দুই ফুটফুটে ছেলে সন্তানও রয়েছে।

এর আগে তাছমিনকে পারিবারিকভাবে ভারুয়াখালীতে বিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। কিছুদিনের মধ্যে ওই বিয়ে ভেঙে যায়। পরে হাসান তাকে বিয়ে করে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত হাসান তার স্ত্রীকে ঈদগাঁও বাজারের নুর শপিং কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ নূরের বাসার সংলগ্ন একটি বাসায় গত মাসে ভাড়াটিয়া হিসেবে রাখেন। আগামী মাসে তার স্ত্রীর ছেলে সন্তান নিয়ে সৌদি আরবে চলে যাওয়ার কথা রয়েছে।

ইতোমধ্যে ওই মহিলা শাহীন নামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। জমিদারের স্ত্রীকে মহিলাটি শাহীন নামের ওই যুবককে নিজের ভাই বলে পরিচয় দেয়। দীর্ঘ একমাস সেই বাসায় ওই যুবকের যাতায়াত ছিল। সে মহিলাটিকে বাজার করে দিত বলে স্থানীয়রা জানায়।

খবর নিয়ে জানা গেছে, শাহীনের বাড়ি ইসলামাবাদ ইউনিয়নের পাহাসিয়াখালীতে। সে স্থানীয়ভাবে রবি কোম্পানিতে কাজ করে জানা গেছে।

এ খবর পেয়ে হাসান সৌদি আরব থেকে জমিদারের স্ত্রীর নিকট মোবাইলে শাহিনের ছবিটি পাঠিয়ে জানতে চায় শাহীনকে তারা চেনেন কিনা? জবাবে জমিদারের স্ত্রী বলেন যে, সে নাকি তোমার স্ত্রীর ভাই। তোমার স্ত্রী তাকে নিজের ভাই হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। তোমার স্ত্রীর বাসায় তার নিয়মিত আসা-যাওয়া রয়েছে। এ কথা শোনার পর হাসান অস্থির হয়ে ওঠে।

এ বিষয়ে হাসান স্ত্রীকে ফোন করে। এ সময় স্ত্রীর সাথে মোবাইলে তার ব্যাপক তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে মোবাইলে লাইভে থাকা অবস্থায় ১৬ জুন হাসান সৌদি আরবে প্রথমে নিজের হাতের রগ কাটে, পরে দেয়ালে মাথা মারে এবং শেষে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করে।

২০ জুন নিহত হাসানের স্ত্রী ঈদগাঁও এর বাসা থেকে মালামাল নেয়ার জন্য আসলে জমিদার পক্ষ প্রকৃত অভিভাবক ছাড়া মালামাল দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে বাসায় তালা লাগিয়ে দেন। শেষে ঐ মহিলাটি থানা পুলিশের কাছে মালামাল উদ্ধারের আবেদন করলে ঈদগাঁও থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এসআই শামীম ও এস আই জুয়েল এসে মালামালগুলো ওই মহিলা ও তার বোনকে হস্তান্তর করেন।

এ সময় ঈদগাঁও ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মমতাজ আহমদ, ঈদগাঁও বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

আরো জানা গেছে, ইতোপূর্বে নিহত হাসানের স্ত্রীর এক ভাই আত্মহত্যা করেছিল। মেম্বার মমতাজ আহমেদ জানান, তিনি ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানেন না। পুলিশের কল পেয়ে তিনি ওখানে উপস্থিত হন। ঈদগাঁও বাজার ব্যবসা পরিচালনা পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, শাহীন নামের যুবকটি ওই বাসায় তার খালাতো বোনের কাছে যেত বলে জানিয়েছিল।

স্থানীয় বিভিন্ন জনের সাথে আলাপকালে জানা যায়, শাহিন একপ্রকার স্বামী হিসেবে ওই মহিলার বাড়া বাসাটিতে অবস্থান ও যাতায়াত করতো। ঈদগাঁও থানা এর দ্বিতীয় কর্মকর্তা এসআই শামীম জানান, মহিলার আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা মালামাল বুঝিয়ে দিয়েছি।

খবর নিয়ে জানা গেছে, রবি কোম্পানির চাকরির সুবাদে শাহীন নামের ওই যুবকটি প্রবাসী অসংখ্য পরিবারে পরকিয়ার আগুন জ্বালিয়ে তছনছ করেছে অনেক পরিবার।

এদিকে এই ঘটনা প্রচারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে। শাহীনের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন