বয়স মাত্র ৪৩। এরই মধ্যে পরিশ্রম, দক্ষতা, আর আন্তরিকতা দিয়ে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন ক্রীড়াঙ্গণে। মেধা আর পেশাদারিত্ব দিয়ে সম্ভাবনা ছিল আরো অনেক দূর অবধি যাওয়ার। হলো না। অকালেই সকলের মায়ার বাধন ছিড়ে আহসান আহমেদ অমিত আজ দূর দেশের তাঁরা। সবকিছুর মায়া কাটিয়ে গতপরশু চলে গেছেন না ফেরার দেশে। কিছু অন্তিম যাত্রা যেমন ছাপ রেখে যায় পথে পথে, ফুটবলের অমিতের চীরবিদায়ও তেমনই একটি।
শক্ত হাতে আমৃত্যু পালন করছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) হেড অব মিডিয়ার দায়িত্ব। দীর্ঘ এক যুগ ধরে তার হাতে শক্ত ভিত আর গতি পেয়েছিল বাফুফের কার্যক্রম। এই পথ পরিক্রমায় দক্ষ পেশাদারির মতো যোগসূত্র স্থাপন করে গেছেন বাফুফের সঙ্গে সংবাদমাধ্যম আর সাংবাদিকদের। আকস্মিকভাবে তার চলে যাওয়ায় সে মেলবন্ধনে ছেদ পড়া মানতে পারছেন না তার সহকর্মী থেকে শুরু করে ফুটবল ম্যাচ কাভার করতে মতিঝিলের ফুটবল ভবনে যুক্ত হওয়া ক্রীড়া সাংবাদিকরাও।
অমিত দীর্ঘ দিন ধরেই ভুগছিলেন যকৃৎজনিত নানান জটিলতায়। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য ৩ মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন ভারতে। কয়েক দিন আগে দিল্লীর এক হাসপাতালে সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনও হয় তার। দিন গুনছিলেন সুস্থ্য হয়ে দেশে ফেরার, ফুটবলে ফেরার। তবে এরই মধ্যে ‘বড় ভাই স্ট্রোক করে মুমূর্যু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি’ এই খবর শোনার পর থেকেই অস্থিরতা পেয়ে বসে অমিতকে। দিনভর কান্নাকাটির ধকল নিতে পারেনি তার শরীর। কয়েকদফা স্ট্রোক করেন নিজেও। সেখান থেকে আর ফেরানো যায়নি ফুটবলের এই অকুণ্ঠপ্রাণ অমিতকে।
তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই শোকাচ্ছন্ন ফুটবলসহ দেশের ক্রীড়াঙ্গণ। বিশেষ করে নানান দাপ্তরিক কাজে ফুটবল ভবনে এসে যেসকল সাংবাদিকরা সহযোগীতা পেয়েছেন অমিতের তাদের হৃদয় কাঁদছে থেমে থেমে। বার বারই প্রশ্ন উঠছে ‘এত তাড়াতাড়ি চলে গেলে ভাই’। শুধু বাফুফের মিডিয়া বিভাগে কর্মরত থাকলেও অমিত ছিলেন একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠকও। ছিলেন বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাবের কর্মকর্তা। টেবিল টেনিস ও হ্যান্ডবল ডিসিপ্লিনেও সংগঠক হিসেবে স্বাক্ষর রেখেছেন দক্ষতার। বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষও ছিলেন অমিত। তার এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে অমিতের রুহের মাগফেরাত কামনাসহ শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাফুফের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন, জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে, অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াসহ দেশবরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়রা।
এছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন বার্তায় শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), আরচ্যারি ফেডারেশন, টেবিল টেনিস ফেডারেশন, বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাব, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব, বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস কমিউনিটি (বিএসজেসি), বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন