কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনে সড়কে বেড়েছে যান চলাচল। কাজের খোঁজে রাস্তায় নামছেন অনেকে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন কঠোর অবস্থান। কঠোর লকডাউন কার্যকরে মাঠে ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে সর্বাত্মক লকডাউনে সড়কে যান চলাচল বাড়ছে। পাড়া, মহল্লা ও উম্মুক্ত স্থানে মানুষের ভিড় জটলাও বেড়ে চলেছে। তবে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও স্বল্প আয়ের লোকজন। কাজের খোঁজে তারা রাস্তায় নামছেন। তবে সবকিছু বন্ধ থাকায় কাজ মিলছে না। নগরীর স্টেশন রোড, রেয়াজুদ্দিন বাজার, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আসদগঞ্জ এলাকায় কুলি মজুরদের ভিড় দেখা যায়। কাজের আশায় সেখানে জড়ো হন অনেকে। নগরীর চকবাজার, ষোলশহর, দেওয়ানহাট, স্টিল মিলবাজার, বহদ্দারহাট, কালামিয়ার বাজারসহ শ্রমিকের হাটগুলোতেও মহামন্দা চলছে। কাজের আশায় বসে থাকতে দেখা যায় শ্রমিকদের। করোনায় কাজ নেই, এতে বিপাকে এসব মানুষ।
গতকাল তৃতীয় দিনে নগরীর অনেক এলাকায় রিকশার পাশাপাশি ব্যাপকহারে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করে। আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম হাউস, ইপিজেড ও কলকারখানা চালু রয়েছে। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এসব কর্মজীবীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। কয়েকগুণ বেশি ভাড়ায় রিকশায় তাদের যাতায়াত করতে হয়েছে। সকালে এবং বিকেলে নগরীর মোড়ে মোড়ে গণপরিবহনের অপেক্ষায় লোকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
আমদানি-রফতানি ও পণ্যপরিবহনের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পথে পথে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। লকডাউন নিশ্চিতে নগরীতে সেনা বাহিনী এবং র্যাব পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। বিকেলেও নগরীর পতেঙ্গা সৈকত এবং উম্মুক্ত স্থানে মানুষের ভিড় দেখা যায়।
সিলেট ব্যুরো জানায়, আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যে দিয়ে লকডাউনের তৃতীয় দিন পার হয়েছে সিলেটে। গতকাল লকডাউন কার্যকরে মাঠে ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা। সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় টহল দিতে দেখা গেছে তাদের। এসময় লকডাউন অমান্যের ঘটনায় মামলা ও জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। করোনার বিধিনিষেধে ডেম কেয়ার দেখাচ্ছেন বিশেষ করে রাজনীতিক নেতারা। রাজনীতিক প্রভাবশালীদের এহেন আচরণে লকডাউনের সরকারি নির্দেশনা হয়ে উঠছে প্রশ্নবিদ্ধ। সিলেটের প্রবেশদ্বার দক্ষিণ সুরমা, কুমারগাঁও তেমুখী বাইপাস, শাহপরাণ পয়েন্ট, শেখঘাট, বিমানবন্দর সড়ক, ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে চেকপোস্টে। গতকাল সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত¡াবধানে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা ছিল সক্রিয়। লকডাউনের প্রথম দুদিন নগরীতে সিটি মেয়র আরফিুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়।
স্টাফ রির্পোটার গাইবান্ধা থেকে জানান, করোনা মহামারী মোকাবেলায় গাইবান্ধায় তৃতীয় দিন লকডাউন চলছে। সরকারি নির্দেশনা মেনে সর্বস্তরের লোকজন সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিধিনিষেধ প্রতিপালন করছে। গাইবান্ধা থেকে আন্তঃজেলা ও ঢাকা রাজধানীর সাথে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে ফলে সকাল থেকেই শহরে লোক সমাগম কম ছিলো। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তোঁরা, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকানগুলো সীমিতভাবে খোলা রেখে বেচাকেনা করছে।
স্টাফ রিপোর্টার মাগুরা থেকে জানান, মাগুরা কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের তৃতীয় দিন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ দিনব্যাপী সমগ্র জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, রোভার স্কাউটস ও রেডক্রিসেন্ট মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। বিনা কারণে বাইরে আসা, মাস্ক না পরাসহ বিভিন্ন কারণে জরিমানা করা সহ শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণকরা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি মাঠে কাজ করছে। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৫৪টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পাশাপাশি কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিসস্ট্রেটদের নের্তৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠে রয়েছে।
পাবনা জেলা সংবাদদাতা জানান, পাবনায় করোনার বিস্তার ঠেকাতে তৃতীয় দিনের মত কঠোর লকডাউন চলছে। সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপয়েন্টে পুলিশ অবস্থান নেয়। পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড়, অনন্ত মোড়, আলিয়া মাদরাজ মোড়, লাইব্রেরি মোড়, দোয়েল চত্বরে পুলিশের চেকপোস্ট দেখা যায়। এসময় শহর প্রায় জমশূণ্যই ছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষ শহরে ভিড় জমানো শুরু করলে পুলিশ তাদের ঘড়ে ফিরতে বলে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলেন।
পিরোজপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল শনিবার সকাল থেকে পিরোজপুর শহরের বিভিন্ন জনবহুল জায়গাগুলোতে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারী। জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, সকাল থেকেই জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার মাঠে থেকে যৌথ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, শেরপুরে কঠোর লকডাউনের তৃতীয় দিনেও সড়কে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান রয়েছে। জেলায় ১৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে শক্তিশালী জেলা পুলিশের সঙ্গে আছে ১শ’ সেনাবাহিনী, ২ প্লাটুন বিজিবি ও ১ প্লাটুন আনসারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা
হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, কঠোর লকডাউন ও সরকারি বিধি নিষেধ প্রতিপালন করতে জেলা প্রশাসনসহ ৯টি উপজেলায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন।
লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, তৃতীয় দিনের লকডাউনে লক্ষ্মীপুরে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন, আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনি ও সেনা সদস্যরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন