বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নির্র্মাণকাজ শেষ হচ্ছে আগামী জুনের মধ্যে

পায়রা, বেকুটিয়া ও কালনা সেতু

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

কুয়েত, জাপান, চীন, ওপেক এবং বাংলাদেশ সরকারের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৩টি সেতু দক্ষিণাঞ্চলের আর্র্থ-সামজিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের মাইলফলক হয়ে উঠতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু চালুর আগেই বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালীতে পায়রা সেতু, বরিশাল-খুলনা-যশোর মহাসড়কের বেকুটিয়ায় চীন-বাংলাদেশ ৮ম মৈত্রী সেতু এবং গোপালগঞ্জ-যশোর মহাসড়কে কালনা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চলছে। যদিও লকডাউনের কারণে প্রকল্পে নিয়োজিত চীন ও জাপানি প্রকৌশলীদের আসা যাওয়া ও সেতুর সরঞ্জামাদী পরিবহন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, তবুও সংশ্লিষ্ট নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ এগিয়ে নেয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রকল্প কর্মকর্তারা।

পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ আগামী মাসেই শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের লক্ষ্যে প্রাথমিক কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে। ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ লেনের পায়রা সেতু নির্মাণে কুয়েত এবং ওপেক উন্নয়ন তহবিল থেকে ১ হাজার ৭৯ কোটি টাকা এবং নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৬৮ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এক্সট্রা ডোজ প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার টাইপের এ সেতুটির সাথে ১ হাজার ২৬৮ মিটার সংযোগ সড়ক এবং প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী শাসন কাজ চলছে। টোল প্লাজাসহ প্রকল্পের সার্বিক কাজের প্রায় ৯৮ ভাগ শেষ হয়েছে। নদী শাসনের কিছু কাজ বাকি থাকলেও তা চলমান অবস্থায়ই সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। পায়রা সেতু চালু হলে সারা দেশের সাথে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরের সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। এর ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে কুয়াকাটা পৌঁছা যাবে মাত্র ৭ ঘণ্টায়। সারা দেশের সাথে কুয়াকাটার দূরত্ব হবে কক্সবাজারের প্রায় অর্ধেক। চীনের লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড সেতুটির নির্মাণ কাজ করছে।

পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় কঁচা নদীর ওপর চীন সরকারের অনুদানে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চীন-বাংলাদেশ ৮ম মৈত্রী সেতু’র নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে ৭২ ভাগ শেষ হয়েছে। মূল সেতুটি নির্মাণে চীন সরকার সম্পূূর্র্ণ অনুদান প্রদান করছে প্রায় ৬৫৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা। আগামী জুনের মধ্যে এ সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। ফলে চট্টগ্রাম-বরিশাল ও সমগ্র খুলনা বিভাগ এবং বেনাপোল ও ভোমড়া স্থল বন্দরের সহজতর সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।

চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিয়ার বিশিষ্ট এ সেতুটি নির্মাণ করছে। সর্বোচ্চ জোয়ারের চেয়ে ৬০ ফুট উচ্চতায় নির্মাণাধীন সেতুটির নিচ দিয়ে পণ্য ও জ্বালানিবাহী বড় ধরনের নৌযান ও নৌবাহিনীর ফ্রিগেট চলাচলও করতে পারবে। কঁচা নদীতে নির্মিত সেতুটির সবচেয়ে বড় স্প্যানটিতে ১২২ মিটার এলাকা নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হচ্ছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনার আলোকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অপরদিকে জাপানি সহায়তায় গোপালগঞ্জ-যশোর মহাসড়কে কালনা সেতুর নির্র্মাণ কাজও আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হচ্ছে। মধুমতি নদীর ওপর ৯৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম ৬ লেন সেতু এটি। সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ কালনা সেতু নির্মাণে জাইকা সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছে ৭৫৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ব্যয় করছে ২০৬ কোটি টাকা। ৫৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির মধ্যবর্তী অংশে ১৫০ মিটার ‘নিয়েলসান লোস আর্থ টাইপ স্টিল ব্রিজ’ নির্মাণ করা হচ্ছে। কালনা সেতু নির্মাণের ফলে যশোর ও বেনাপোলের সাথে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। বেনাপোল ও ভোমড়া’র সাথে বরিশাল ও ঢাকার দূরত্ব হ্রাস পাবে। প্রকল্প পরিচালক শ্যামল কুমার জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু চালুর আগেই কালনা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মূক্ত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন