কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরকীয়ার অভিযোগে এক যুবককে সালিশে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। এ নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই নির্যাতনের শিকার সেই যুবক পলাতক রয়েছেন।
আটকরা হলেন, মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নওয়াব আলী ও আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক আলী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মালিহাদ ইউনিয়নের এক যুবক তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। এ সময় প্রতিবেশীরা তাদের দুজনকে আটক করেন। পরদিন বেলা ১১টায় এ ঘটনায় গ্রামে সালিশ বসে। মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন গ্রামের শত শত লোকের উপস্থিতিতে বিচারের রায় ঘোষণা করেন। এ সময় যুবককে জুতার মালা পরিয়ে অর্ধেক গ্রাম ঘোরানোর পাশাপাশি, ৩০টি বেত্রাঘাত ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া এ সময় ওই নারীর স্বামী তার সঙ্গে সংসার করতে আপত্তি জানালে সালিশেই তাদের তালাক দেয়ানো হয়। পরে স্থানীয়রা যুবকের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে দিতে চাইলে, তিনি রাজি না হওয়ায় বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আমিরুল ইসলাম জানান, বৈঠকে অভিযুক্ত যুবককে প্রকাশ্যে গ্রামবাসীদের সামনে বেধড়ক পেটানো হয় ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়। সালিশে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিচারের নামে লাঠি দিয়ে মারধরের ভিডিও দেখে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল থেকে জুতার মালাসহ আলামত জব্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানায় নেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুষ্টিয়া জেলার এস পি মোঃ খাইরুল আলম বলেন আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন