ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লাউদিয়া গ্রামে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পাওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের পিলার ভেঙ্গে পড়েছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঘরের বাসিন্দা আরিফুল ইসলামের ঘুম ভাঙ্গে পিলার ভাঙ্গার শব্দে। এর পর থেকে আতংক দেখা দেয় ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মাঝে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান খবর পেয়ে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তাদের ধারণা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য রাতের আধারে ষড়যন্ত্র করে পিলার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কারণ এই আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরীর শুরু থেকেই স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বাধা দিয়ে আসছিলো।
লাউদিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, আবাসনের এক নং ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙ্গে পড়ে আছে। মাটিতে পড়ে পিলারটি কয়েক টুকরো হয়ে গেছে।এমনিতেই নাকি কে বা কারা পিলার ভেঙ্গেছে তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। অন্যান্য ঘরগুলোর পলেস্তারা, মেঝের ফিনিশিং ও রং খুবই নি¤œমানে। ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। আবাসনে সুপেয় পানির অভাব রয়েছে।
ঘরের বাসিন্দা ফাতেমা ওরফে বাতাসি খাতুন জানান, শুক্রবার রাত ১০ টার পরে ঘরের সামনে জোরে কিছু ভেঙ্গে পড়ার শব্দ শুনতে পান তিনি। বাইরে বেরিয়ে দেখতে পান ঘরের সামনের ডান পাশের পিলার ভেঙ্গে পড়ে আছে। ওই নারী জানান, পিলার ভেঙ্গে পড়ার পর থেকে খুব ভয়ে আছি। কখন জানি ঘর ভাঙ্গে মাথায় না পড়ে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা তারা বানু ঘর নিয়ে নানা অভিযোগ করেন। বাসিন্দাদের মধ্যে এক নারী পরিদর্শনে যাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীনের কাছে ভেজাল ও নিম্নমানের কথা জানালে জবাবে ইউএনও বলে ওঠেন“ এই আপনি এতো কথা বলছেন কেন, আপনিই ফেলেছেন তাহলে”। ইউএনওর কথার সঙ্গে সাই দেন অফিসের ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর হোসেন।
কিছুক্ষণ পর স্থানীয় সুরাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন জোয়াদার এসে ঘরের উপকারভোগী আরিফুল ইসলামকে বলেন “কারা ভেঙ্গেছে নাম না বললে ঘর ফেরৎ নেওয়া হবে”। হয় নাম কও নাই ঘর থেকে নামো’। উত্তরে আরিফুল জানান, আল্লাহর কিরে আমারা পিলারে হাত-ই দিই নি, এ করে আমার লাভ কি।
লাউদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী বলেন, যে পিলার ভেঙ্গে পড়েছে সেটা ৫ ফুট হলেও রড দেওয়া হয়েছে দুই ফুট। ঠিকমত সিমেন্টও দিইনি। তাহলে খুটি থাকবে কি করে ? বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের ইঞ্জিনিয়ার হাসিবুর রহমান জানান, দুর্যোগ বিহীন পরিবেশে ঘরের পিলার এ ভাবে পড়তে পারে না। মনে হচ্ছে কেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য রাতের আঁধারে কে বা কারা এই কাজ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ঘটনা শোনার পর সেখানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে পাঠানো হয়েছে। তারা ঘুরে এসে বিষয়টি জানালে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে এলাকার বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান নির্মাণ কাজ হয়েছে নিম্নমানের এখন নিজেদের দায় অন্যর উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে !
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন