মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ভূমধ্যসাগরে হিটস্টকে মাদারীপুরের এক যুবকের মৃত্যু

গুরুতর অসুস্থ ১০ যুবক

মাদারীপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২১, ৭:১৮ পিএম

অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে হিটস্টকে মারা গেছে হৃদয় কাজী (২২) নামে এক যুবক। এ সময় গুরুতর অসুস্থ হয়েছে আরো ১০ জন। লিবিয়ার নৌ-পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ওই দেশের একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছে বলে ভুক্তভোগী পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। মৃত হৃদয় কাজী মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট ঘোষালকান্দি গ্রামের মোশারফ কাজীর ছেলে। এ ঘটনায় দালালদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। হৃদয় মারা যাওয়ার খবর শুক্রবার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে। এলাকায় এখন শোকের মাতম বইছে।

নিহত হৃদয়ের পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন মাস আগে দালালদের খপ্পড়ে পড়ে রাজৈর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের টেকেরহাট ঘোষালকান্দি এলাকার মোশারফ কাজীর ছেলে হৃদয়কে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে দীর্ঘদিন আটকে নির্যাতন চালায়। পরে গত ১৯ জুলাই লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অন্যান্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের সাথে দালালরা ইতালীর উদ্দেশ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে বাধ্য করে। পরে ভূমধ্যসাগরের মাঝামাঝি গেলে নৌকাটির ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে সাগরে ভাসতে থাকে। এতে প্রচন্ড রোদের তাপ ও গরমের কারণে হিটস্টকে প্রাণ হারায় হৃদয় কাজী।

একই নৌকায় থাকা হৃদয় কাজীর বন্ধু হৃদয় শেখ জানায়, হৃদয় কাজী আমার কোলেই পানি পানি করতে করতে মারা গিয়েছে। আমিও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছি। এছাড়াও একই উপজেলার ছাতিয়ানবাড়ী গ্রামের সাধন বিশ্বাস, হোসেনপুর এলাকার জিন্নাত শেখ, শংকরদী গ্রামের সাগর সিকদারসহ ১০জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহত হৃদয় কাজীর মা কোমেলা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে হৃদয় কাজীর সাথে সর্বশেষ আমার সাথে গত ১৭ জুলাই ফোনে কথা হয়েছে । তখন আমার ছেলে কেঁদে কেঁদে আমাকে বার বার বলছিল মা আমাকে দালালরা মারধর করে। ঠিকমত খাবার দেয় না।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানায়, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের মানব পাচারচক্রের সদস্য আক্কাস ফকিরের ছেলে ইলিয়াছ ফকির ও টুটুল ফকির ইতালী নেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে হৃদয়ের পরিবারের কাছ থেকে দুই দফা আদায় করে ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ধার-দেনা করে এই টাকা জোগাড় করে দিলেও শেষরক্ষা হয়নি হৃদয়ের। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। হৃদয়ের সাথে থাকা রাজৈর উপজেলার অসুস্থ ১০ যুবক গুরুতর অবস্থায় লিবিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন অসহায় পরিবারগুলো।

এ ব্যাপারে রাজৈর থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন