নদীমাতৃক এদেশে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী। ছোট বড় মিলিয়ে এর সংখ্যা প্রায় ৭০০। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকাল এসব নদ-নদী চলার গতি হারিয়ে ফেলছে। ফলে নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। যা মোটেও কাম্য ছিল না। কেননা নদী এদেশের প্রাণ। তাই নদীকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। নদীর নাব্য বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আরো যে কাজটি করা প্রযোজন, তা হলো নদীকে বিজ্ঞানভিত্তিক শাসন। দেশের যে স্বল্প সংখ্যক ড্রেজার রয়েছে এগুলোর মাধ্যমে অব্যাহত ড্রেজিং কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে বাড়তি ড্রেজার বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। এই কাজ প্রথমে দেশের বড় নদ-নদীতে করতে হবে। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য নদীতে করতে হবে আর এর মাধ্যমে নদীর হারানো যৌবনকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মো. মানিক উল্লাহ
মাজগ্রাম, বেতিল হাটখোলা, এনায়েতপুর, সিরাজগঞ্জ।
সন্ধ্যা ও কচা নদীর ভাঙন
প্রকৃতি যেমন দুহাত ভরে দিয়েছে এ দেশকে, তেমনি নির্দয়ভরে কেড়ে নিতে দ্বিধা করেনি। সন্ধ্যা আর কচা নদীর ভাঙনে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ফলে পাল্টে যাচ্ছে উপজেলার মানচিত্র। ২০ বছর ধরে প্রতিদিন আমজুড়ী ইউনিয়নের সোনাকুর, রঘুনাথপুর, মাগুড়া, আশোয়, চিরাপাড়া ইউনিয়নের বেকুটিয়া ফেরিঘাট থেকে শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের জোলাগাতী টাওয়ার এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামের অংশ নদীর গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। বিলীন হচ্ছে আমরাজুড়ী উইনিয়ন পরিষদ ভবন, আমরাজুড়ী ফেরিঘাট, আমরাজুড়ী বাজার, আশোয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দত্তের হাট। তিনবার ভাঙনের পর কোনো রকম দাঁড়িয়ে আছে গন্ধর্ব জানকিনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিলীন হওয়ার পথে শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের পাঙ্গাশিয়া জোলাগাতী বেড়িবাঁধ। হুমকির মুখে সরকারি খাদ্যগুদাম, বিআরটিও, পাইলট হাউজ। সন্ধ্যা আর কচা নদীর ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে আশু ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আ. লতিফ খসরু
কাউখালী, পিরোজপুর।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে করণীয়
বহু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বিশেষ সুপারিশ ও প্রত্যায়নের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ ও গেজেট প্রকাশের আলোকে তালিকায় অন্তভুক্ত হয়েছে এবং হওয়ার চেষ্টা করছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন সরকারের সময়ে বিভিন্ন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুযোগ রাখা হয়েছিল। যেমন কল্যাণ ট্রাস্ট তালিকা, জাতীয় তালিকা, ভোটার সুছক তালিকা, মুক্তিবার্তা তালিকা, ইবিআরসি তালিকা, নাথ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হলে আবার তালিকার্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা সে সুযোগ নিয়েছে এবং আরো নেয়ার চেষ্টা করেছে। এ অবস্থায়, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যারা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ দিয়েছে আইনের মাধ্যমে যাচাই-বাচাই করে ভুয়া প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে সরকার কর্তৃক কোটাভিত্তিক সুবিধা বাতিল করার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এম আবদুর রহিম, লস্কহাট,ফেনী।
প্রাথমকি শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্প
প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো-ছাত্রছাত্রীর ভর্তির হার বৃদ্ধি, প্রাথমিক শিক্ষা চক্র সমাপণ, দারিদ্র্যের হারহ্রাস, শিশুশ্রম বন্ধ, ঝরে পড়া রোধ, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা জোরদারকণ সর্বোপরি মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। বিগত সময়ে উপজেলাভিত্তিক উপবৃত্তির একটি নির্দিষ্ট কোটা চালু থাকলেও ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন ছাড়া প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর জন্য উপবৃত্তি চালু হয়।
প্রথমত. উপবৃত্তি পাওয়ার ক্ষেতে শিক্ষার্থীর প্রতি মাসে বিদ্যালয়ের মোট কর্মদিবসের ৮৫% উপস্থিতি বিধান রয়েছে। কিšরু অনেক অসচেতন অভিভাবক তাদের সন্তানদের নির্দিষ্ট দিনে বিদ্যালয়ে না পাঠিয়ে সরকারি অর্থ পেয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মসাতের ভুয়া অভিযোগ দাখিল করেন। এ কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা অভিভাবকের সঙ্গে বিবাদে না জড়িয়ে শিক্ষা প্রশাসককে উপেক্ষা করে ছাত্রছাত্রীর হাজিরা রেজিস্টারের ভুয়া হাজিরা নিশ্চিত করা হয়। ফলে যে উদ্দেশ্যে সরকার প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি চালু করেছেন তা অনেকাংশে ব্যাহত হয়।
দ্বিতীয়ত. উপবৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষায় প্রত্যেক বিষয়ে ন্যূনতম ৩৩% নম্বর প্রাপ্তির বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে কোন কোনো শিক্ষক অভিভাবকদের রক্তচক্ষুর হাত থেকে নিজেকে আড়াল করার অভিপ্রায় পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের নম্বরপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অতএব, সরকারের বৃত্তি প্রদানের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সমাজ সচেতনতা আবশ্যক।
প্রসঙ্গত, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বস্তিবাসী ও নি¤œ আয়ের পেশাজীবী মানুষের সন্তানেরা লেখাপড়া করে। কিন্তু তারা বাবা-মায়ের কাজে সহায়তা করে, রিকশা ভ্যান, চালায়, বাস-টেম্পোতে হেলপারি করে, হোটেলে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকার সকল ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি চালু করার প্রয়োজন।
পরিশেষে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের একইদিনে কম সংখ্যক বিদ্যালয়ে অর্থ বিতরণ, প্রকৃত অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি ও শিক্ষক-অভিভাবক কমিটি আরো সক্রিয় এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারে তদারকির মাত্রা বৃদ্ধি করলে উপবৃত্তি প্রদানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। সরকারি অর্থের অপচয় রোধ হবে।
মো. আনিছুর রহমান
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোড়লগঞ্জ, বাগেরহাট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন