তামাকমুক্ত দেশ গড়তে এবং যুব সমাজকে তামাকের ভয়াবহতা থেকে বাঁচাতে সকল ধরনের তামাক পণ্যের সহজলভ্যতা কমানো দরকার । তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র-ডর্প’ এর উদ্দ্যোগে লক্ষ্যে বুধবার (২৮ জুলাই) ভার্চুয়ালি বুনিয়াদি প্রশিক্ষন (ওরিয়েন্টেশন) এর আয়োজন করা হয়।
ডর্প আয়োজিত প্রশিক্ষন পরিচালনায় ডর্প এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে তুলে ধরেন ডর্প এর উপ-নির্বাহী প্রধান মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান হাসান বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে এদেশের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে এবং যুবরাই পারবে তামাকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে।
উক্ত অনলাইন ওরিয়েন্টেশন এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. আজহারুল ইসলাম খান (অতিরিক্ত সচিব) মহাপরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতীয় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষন মডিউলে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে করে যুব সমাজ তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হয়। ১৯৭১ এ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে যুবরা এগিয়ে এসেছিলো বলেই এই দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে তেমনি তামাক নিয়ন্ত্রণেও যুবরা এগিয়ে আসলে বাংলাদেশ আবারো সফলতা লাভ করবে। এবং তিনি আরো বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর তামাক নিয়ন্ত্রণে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করবে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে নীতি নির্ধারক পর্যায়ে জোর দাবি তুলে ধরবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোলাম মেজবাহ উদ্দিন, সাবেক পরিচালক, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো ও চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রিসোর্স ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ব্রিট) তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, তামাক নিইয়ন্ত্রণে শুধু আইনের সংশোধন করলেই হবে না একই সাথে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক প্রয়োগ করাও জরুরী”। এছাড়া আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আরিফুর রহমান, সেক্রেটারী, ডেভেলপমেন্ট জার্নালিষ্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ, তিনি বলেন তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রমে যুবরা তামাক ব্যবহারে উৎসাহিত হয়। তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক আইন সংশোধন করে তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর গ্রান্টস ম্যানেজার আব্দুস সালাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, তামাক একটি সামাজিক ব্যাধি, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের কোন বিকল্প নেই। ২০১৩ সালে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এখনো সংশোধনের সুযোগ রয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সংশোধনের পর্যায়ে রয়েছে।
ওরিয়েন্টেশন পরিচালনা করেন রুবিনা ইসলাম, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর, টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রজেক্ট, ডর্প।
ওরিয়েন্টেশন উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. আজহার আলী তালুকদার, চেয়ারম্যান, ডর্প এবং অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)। তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬টি ধারার দুর্বলতা তুলে ধরেন এবং একই সাথে এই আইনের ৬টি ধারার প্রস্তাবিত সংশোধনী আলোচনা করেন।
এতে আইনে গণপরিবহন ও রেস্তোঁরাসমূহে ক্ষেত্রবিশেষে ধূমপানের সুযোগ রাখা হয়েছে, তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্রে প্রোডাক্ট ডিসপ্লে নিষিদ্ধ নয়, তামাক কোম্পানির সবধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ নয়, দেশে সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি ও তামাকপাতা খোলা বিক্রি নিষিদ্ধ নয়, ই-সিগারেটসহ ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট বিক্রয় ও আমদানী বর্তমান আইনে উল্লেখ্য করা হয় নি এবং সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য, বিশেষ করে ধোঁয়াবিহীন তামাক দ্রব্য ও বিড়ির মোড়কের আকার/আয়তন নির্ধারণ না করায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে তামাকের বিরুদ্ধে মতামত তুলে ধরেন সোহানুর রহমান, নির্বাহী প্রধান, বাংলাদেশ মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্ট। তিনি বলেন , বাংলাদেশ অন্যান্য অনেক বিষয়ে যেমন সফলতা অর্জন করেছে তেমনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে তামাক নিয়ন্ত্রণেও সফলতা অর্জন করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. আজহার আলী তালুকদার, চেয়ারম্যান, ডর্প এবং অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত)। সভাপতির বক্তব্যে মো. আজহার আলী তালুকদার বলেন, যুবরা এগিয়ে আসলে সব কিছুই সম্ভব তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে যুবদের এগিয়ে আশার আহবান জানান এবং একই সাথে যুব প্রতিনিধিরা যাতে তামাকের ভয়াবহতা অন্যান্য যুবকদের মাঝে তুলে ধরে সচেতন করেন সে আশাবাদ ও ব্যক্ত করেন। সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন