রোববার থেকে গার্মেন্টসসহ দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প কলকারখানা খুলে দিয়েছে সরকার। খবরে শনিবার শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিঘাটে ঢাকার পথে মানুষের স্রোত দেখা গেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পথে পথে ভোগান্তি নিয়েই রাজধানীর দিকে ছুটছে মানুষ। উত্তাল পদ্মায় বৈরি আবহওয়ার মধ্যেও ফেরিতে নদী পার হয়ে হাজার হাজার যাত্রী ও ব্যক্তিগত যানবাহন ঢাকায় ছুটছেন। যাত্রীদের কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও শারীরিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিলোনা। জরুরি ও বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চালুর কথা থাকলেও মানুষের চাপে বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসতে পারেনি রোগিবাহী গাড়িসহ অন্যন্য গাড়ি। অতিরিক্ত যাত্রী চাপের কারণে ফেরিতে জরুরি পরিসেবার গাড়ি উঠাতে হিমশিম খাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরির সংখ্যা ৮টি থেকে বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা যাত্রীদের বেশিরভাগই পোশাককর্মী বা পোশাক কারখানার সঙ্গে জড়িত।
এদিকে শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছে ঢাকামুখী যাত্রীরা সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট এড়িয়ে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাসসহ ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে পায়ে হেটে গন্তব্যে রওনা হচ্ছে। সড়কে যাত্রীদের তুলনায় অল্পসংখ্যক ব্যাটারি চালিত আটো রিক্সা, ছোট ছোট যানবাহন দেখা গেছে। এতে চারগুন-পাচগুন বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। যানবাহন না পেয়ে যাত্রীদের পায়ে হেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হতে দেখা গেছে।
যাত্রীরা জানান, প্রয়োজনীয় কাজ এবং জীবিকার তাগিদে কর্মস্থলে ছুটছেন তাঁরা। পোশাককর্মীরা বলছেন, গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়েছে, তাই যেকোনো উপায়ে গার্মেন্টসে যোগদান করতে হবে, না হলে চাকরি থাকবে না। এসব যাত্রীর মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি দেখা গেছে । বিলকিছ বেগম নামে এক নারী জানিয়েছেন, তিনি বরিশাল থেকে রওনা দিয়েছেন গাজীপুরের মাওনা যাবেন।
তিনি আরোও জানান আগে জানতাম ৫ তারিখ পর্যন্ত গার্মেন্টস বন্ধ থাকবে। সরকার কালকে ঘোষণা দিছে, রোববার থেকেই নাকি গার্মেন্টস খুলবে। মুই এখন কি করবো পেটের দায়ে চাকরি বাঁচাতে হলে তো মোর জাওয়াই লাগবো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারি ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজারগামী যাত্রীর সংখ্যা কম। তবে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতেই চাপ রয়েছে। ঘাটে গাড়ির চাপ না থাকায় যেসব গাড়ি পারাপারের জন্য আসছে, সেগুলোকে খুব একটা অপেক্ষা করতে হচ্ছে না,গাড়ি আসা মাত্রই সরাসরি ফেরিতে উঠতে পারছে।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আলমগির হোসেন জানান, লকডাউনকে কেন্দ্র করে শিমুলিয়া ঘাটসহ উপজেলার বিভিন্ন প্রবেশ পথগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট রয়েছে। জরুরি পরিসেবার গাড়ি ব্যতীত অন্যান্য গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ফেরিতে দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা যাত্রীরা শিমুলিয়া ঘাটে এসে যাত্রীরা ঢাকায় ছুটছেন। যাত্রীপারাপারের বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় যাত্রীরা ঘাটে এসে পার হতে পারছেন। যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে আহ্বান করা হচ্ছে নিয়মিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন