শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন

ভাঙ্গন ঠেকাতে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২১, ৭:২৩ পিএম

কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। জেলার দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার ৩ ইউনিয়নের কয়েক কি. মি. এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙ্গনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও এলাকার সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসীর দাবি ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের। তবে দৌলতপুরের সংসদ সদস্য এ্যাড আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহর প্রচেষ্টায় পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকাতে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন ও ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষের পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে বসতবাড়ি ও কয়েক হাজার একর আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারী স্থাপনা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মাগর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। ভাঙ্গন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।

মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়া এলাকার কৃষক ফজলুল হক জানান, প্রতিবছরই পদ্মা নদীতে পানি আসলে জমি জায়গা ভেঙ্গে নদীতে তলিয়ে যায়। এবারও এলাকার অসংখ্য মানুষের আবাদী জমি পদ্মার ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসীর জমি জায়গা ও ঘর-বাড়ি বাঁচাতে পদ্মার ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

উজ্বল হোসেন নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখোলা পাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মার ভাঙ্গন ঠোকাতে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সংসদ সদস্যের চেষ্টায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, নদী ভাঙ্গনের কবলে তার ইউনিয়ন ব্যাপক হুমকির মুখে আছে। ইতিপূর্বে তার ইউনিয়নের নদীভরাট, চিতলমারী, রুইমারী, চৌদ্দহাজার ও নতুন চরসহ অনেকগুলো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপড়া ও কোলদিয়াড় এলাকা প্রবল নদী ভাঙ্গনে জমি জায়গা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রাইমারী ও হাইস্কুল এবং ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুঁটি হুমকির মুখে রয়েছে। কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এ্যাড আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ ভাইয়ের ঐকান্তিক পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এর জন্য তিনি সাধুবাদ জানান। তিনি পদ্মার ভাঙ্গনরোধে অতিশীঘ্রই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে এই ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ড নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি করেন। যাতে করে তাদের আবাদী জমি বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাস্তা-ঘাট ও জুনিয়াদহ বাজার এবং অসংখ্য সরকারী বেসরকারী স্থাপনা রক্ষা পায়। এজন্য তিনি সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অপরদিকে পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান ছবি জানান, পদ্মার পানি বাড়তে থাকলে বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নের যেখানে বর্ডারস্থল আছে, সেখানে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটা ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। এই বাঁধটা ভেঙ্গে গেলে ভেড়ামারা উপজেলা পানিতে তলিয়ে যাবে। ব্লকবাঁধ দিয়ে এটার স্থায়ী সমাধানে জন্য বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ ইউনিয়নবাসীর পক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার প্রাণের দাবি বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো জানান, রায়টা, আড়কান্দি, গোসাইপাড়া, মালিপড়া, বাহাদুরপুর এলাকার একটা অংশ পদ্মা নদীর ভাঙ্গনের মুখে আছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন