ভারতে ধর্ষণের শিকার হয়েছে দুই বাংলাদেশি তরুণী। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই দুই তরুণীকে ভারতের জেলে বন্দিরাখা হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার জেলার গাইঘাটা এলাকার ঝাউডাঙ্গা সীমান্তে ঘটে এই ঘটনা। নির্যাতিতা এক তরুণীর বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় এবং অন্যজনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায়। নির্যাতিতা এক তরুণীকে ফিরে পেতে সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছে পরিবার। জেলা প্রশাসক বলছেন, এ ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে নেয়া হবে পদক্ষেপ।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে জানতে পারে তরুণীর স্বজনরা। নির্যাতিতার তরুণীর স্বজনদের অভিযোগ, গত ২৮ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার ঝাউডাঙ্গা সীমান্ত এলাকায় এক বাংলাদেশি তরুণী ও তাঁর বান্ধবী দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে আটক হন। আটকের পর ওই দুই নারীকে ১শ’ ৫৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ক্যাম্পে দায়িত্বে ছিলেন বিএসএফের সাব ইন্সপেক্টর রামেশ্বর কয়াল। তাঁর নির্দেশে অন্যসদস্যরা অভিযুক্ত দালালকে ধরতে অভিযানে বের হন। এই সুযোগে ক্যাম্পে অবস্থানকারী রামেশ্বর এক তরুণী ধর্ষণ করেন এবং অন্যজনকে করেন শ্লীলতাহানি। পরে দুইজনকে ছেড়ে দেন অভিযুক্ত রামেশ্বর। ছাড়া পাওয়ার পর গাইঘাটা থানায় এসে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বাংলাদেশী তরুণীরা। থানা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পরদিন আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তকে। একই সময় অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ওই দুই তরুণীকে কারাগারে পাঠায় আদালত। জেলহাজতে থাকা তরুণীদের ফিরে পেতে সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পাশাপাশি ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তারা। নির্যাতিতা এক তরুণীর মা বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। আমার স্বামী মারা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। আমার মেয়েকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে শুনছি। এখন আমার মেয়ে ভারতের জেলে। সরকারের কাছে অনুরোধ আমার মেয়েকে যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’ দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া নির্যাতিতা তরুণীর ভাই জানান, ‘কেমনে কি করমু কিছুই বুঝতেছিনা। সরকার যদি আমাগো সাহায্য করে তাইলে আমার বোন দেশে আসতে পারবে।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নির্যাতিত মেয়েটিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মতে অভিযুক্ত রামেশ্বরকে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর শেষে নির্যাতিতাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এদিকে ওই দুইনারীর মেডিকেল পরীক্ষা হয় বনগাঁ সরকারি হাসপাতালে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন