দীর্ঘ সাড়ে তিন দশকের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে চালু হচ্ছে বগুড়া-মাদারগঞ্জ ফেরি সার্ভিস। আগামী বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
গতকাল সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজলোর বিভিন্ন এলাকার মানুষরা ভিড় করছে কালিতলা গ্রোয়েন সংলগ্ন নৌকা ঘাটে। পারাপারে ব্যবহৃত হবে সি-ট্রাক (আধুনিক ছোট আকারের ফেরি) বলে জানালেন এলাকাবাসী। সি-ট্রাক (আধুনিক ফেরি) যেখানে নোঙর করবে সেই প্লাটুন এখন প্রস্তুত।
এখানে ফেরি সার্ভি সার্ভিস চালু হলে কি লাভ হবে জানতে চাইলে কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান শামীম জানালেন, প্রভুত লাভ হবে। প্রথমত বগুড়ার হালকা প্রকৌশল শিল্প খাতে উৎপন্ন উন্নত মানের কৃষিপণ্য দ্রুততম সময়ে জামালপুর ময়মনসিংহ জামালপুর যাবে। এছাড়া দুইপারের শতশত যাত্রী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে নৌকায় চলাচল করে তার অবসান হবে। অপরদিকে ময়মনসিংহ ও জামালপুরের উৎপাদিত আনারস ও বেগুনসহ মাছ ও কৃষিপণ্য আসবে বগুড়ায়। খুলবে অর্থনীতির এক সম্ভাবনার দুয়ার।
কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি এ প্রসঙ্গে জানালেন, ফেরি সার্ভিস চালু হলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি, সাঘাটা অঞ্চলের মানুষের ঢাকা যাত্রার কাজ সহজ হবে। বিশেষ করে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলার মানুষদের ঢাকা যাওয়ার রাস্তার দৈর্ঘ্য কমবে ৮০ কিলোমিটার ।
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি ইনকিলাবকে বলেন, নৌ পথে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ বগুড়া থেকে জামালপুর ও জামালপুর ময়মনসিংহ থেকে বগুড়ায় আসা যাওয়া করে থাকে। সামান্য ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময লাগে ২/৩ ঘন্টা। ফেরি সার্ভিস চালু হলে সময় লাগবে খুবই কম। এরফলে মানুষের আগ্রহ বেড়ে যাত্রী সংখ্যাও আগের তুলনায় দ্বিগুণ হবে। দুই পৃথক অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হবে দৃঢ় মেল বন্ধন।
এদিকে উদ্বোধনের পর যে সি-ট্রাকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন হবে ওই সি-ট্রাকের ইজারাদার নিয়োগের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। ইজারাদার জাহেদুর রহমান উজ্জল জানিয়েছেন, ১ ঘন্টার যাত্রাপথে প্রতিবার সি ট্রাক পরিবহনে ২০০ যাত্রীর পাশাপাশি ২/৩টি প্রাইভেট কার/মাইক্রো এবং ১৫টি মোটরবাইক পরিবহন করা যাবে।
এদিকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, আপাতত অস্থায়ীভাবে বগুড়ার সারিয়াকান্দির কালিতলা এবং জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার জামথল পয়েন্টে স্থায়ী ফেরিঘাট স্থাপন করা হবে না। প্লাটুনের মাধ্যমেই ফেরি নোঙরের কাজ চালিয়ে নেওয়া হবে। তবে জামালপুর-ময়মনসিংহ এবং যমুনা ব্রীজ অভিমুখি এলজিইডির যে ২৪ ফুটের সড়ক রয়েছে সেই সড়কের দ্বিগুণ সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে স্থায়ী ফেরিঘাট নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন