নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পিলারে বারবার ফেরি ধাক্কা দেয়ার ঘটনায় চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আজ শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকাল পৌনে ৭টার দিকে পদ্মাসেতুর পিলারে চতুর্থবারের মতো ধাক্কা দেয় একটি ফেরি। এনিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বারবার ধাক্কা দেওয়ার পেছনে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন সচেতন নাগরিকরা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে পোস্ট দিয়েছেন কেউ কেউ।
আজ সকাল পৌনে ৭টার দিকে বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া আসার পথে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা লাগে ফেরি কাকলি। যদিও ফেরিচালক মো. বাদল হোসেনের দাবি, নদীর প্রচণ্ড স্রোত ও বাতাসের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়।
এরআগেও তিন বার বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসার পথে পদ্মা সেতুর পিলারে আঘাত করে ফেরি। গত ২০ ও ২৩ জুলাই ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারে এবং ৯ আগস্ট ১০ নম্বর পিলারে আঘাত করে। এসব ঘটনায় থানায় জিডি, তদন্ত কমিটি গঠন ও ফেরি চালকদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পদ্মাসেতুতে একের পর এক ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেসবুকে জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন,
``কিছুদিন আগে পর্যন্ত মাঝে মাঝেই পদ্মা সেতুতে কর্মরত চাইনিজ শ্রমিকরা খুন, নিখোঁজ এবং সেতু থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতো। প্রতিবেশী একটি দেশের পাগল ও মানসিক রোগীদের পদ্মা সেতু পরিদর্শনে এসে আটক হওয়ার খবরও জানা যেত। ইদানিং পদ্মা সেতুর পিলারের যাত্রীবাহী ফেরির ধাক্কা দেয়ার ঘটছে ঘনঘন। এগুলো কি ফেরি চালকদের অদক্ষতা? নাকি এর পেছনে কোন বাতেনি ব্যাপার স্যাপার রয়েছে? বাই দা ওয়ে, এই ধাক্কাধাক্কিতেই কিন্তু রানা প্লাজা ধসেছিল। কাজেই বিষয়টা হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই।''
মোঃ নাঈম লিখেছেন, ‘‘পদ্মা সেতু আমাদের দক্ষিণবঙ্গের জনগণের কাছে বহু দিনের প্রতীক্ষার একটি সেতু । কিন্তু কয়েক দিন পর পর এই সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা খাওয়ার খবর কানে আসছে যা খুবই আঘাত করে অন্তরে।’’
লুতফর রহমানের প্রশ্ন, ‘‘একটা পিলার থেকে আর একটা পিলারের দুরত্ব ১৫০ মিটার, ঔ রকম পাঁচটা ফেরি ও যদি পাশা পাশি চলে তাও পিলারে ধাক্কা লাগবে না। কিন্তু একের পর এক পিলারে ধাক্কা দিচ্ছে কেন? এটা গভীর কোন ষড়যন্ত্র!’’
মুকলেছুর রহমান লিখেছেন, ‘‘চালকের ব্যাখ্যা গ্রহনযোগ্য নয়, এটা উনার অদক্ষতা বা উদাসিনতা অথবা ইচ্ছাকৃত হতে পারে, পূর্বের ঘটনায় কতৃপক্ষ কঠোর না হওয়ার কারনে বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে প্রতিয়মান হয়। বিষয়টি সিরিয়াসলি নেয়া উচিৎ।’’
নজরুল ইসলাম চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘ফেরী গুলো মনে হয় পদ্মা সেতু মানতে পারছে না।তাদের অনেক যুগের ব্যবসা।এই নৌ রুটের জলযান ব্যবসায়ীগণ পদ্মা সেতুকে মেনে নিতে পারছেনা প্রতীয়মান। দ্রুত পদ্মা সেতু প্রান্তে ফেরী চলাচল নিষিদ্ধ করা উচিত।’’
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে মোঃ আকতার হোসেন মীর, ‘‘বার বার কেন এমন ঘটনা ঘটেছে তা সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত অন্যথায় পদ্মা সেতুর বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে।’’
তবে তাওহীদ অপু মনে করেন, ‘‘আমার মনে হচ্ছে পানিতে ফেরির গতিবেগ, এবং পানির চাপ, ঘনত্ব জাতীয় কোন ঝামেলা আছে।এর জন্য চালক পিলারের আশে-পাশে আসলে পুরোপুরি কন্ট্রোল নিতে পারে না। নয়তো ফেরির চালক ইচ্ছা করে আঘাত করার কথা না। কয়েক দিন পর শুন্ততে পাবেন ফেরির এই পিলার গুলো বসানো ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক নিয়মে সামান্য ভুল ছিলো।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন