সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আনোয়ার জাহিদ বেঁচে থাকলে জাতীয়তাবাদীরা পথ হারাতেন না

১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশের জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধের রাজনীতির পুরোধা ব্যাক্তিত্ব প্রখ্যাত রাজনীতিক, সাংবাদিক, জননেতা আনোয়ার জাহিদের গতকাল ছিল ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। আনোয়ার জাহিদ স্মৃতি সংসদ দিবসটি উপলক্ষ্যে স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে আয়োজন করে।

এ সময় বক্তারা বলেন, দেশের রাজনীতি এখন পথহারা। দুর্নীতি আর দুবৃত্তায়নের কারণে রাজনীতি ক্রমান্বয়ে জনগনের আস্থা হারাচ্ছে। সুবিধাবাদি আর লুটেরারা এখন রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করছে। ফলে জাতীয় সঙ্কট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। দেশে এখন পথহারা রাজনীতিবিদরা পরিহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছেন। দলীয় বিবেচনায় তাদের অসম্মানিত করা হচ্ছে। যা জাতির জন্য কল্যাণকর নয়। উজান স্রোতের যাত্রী জননেতা আনোয়ার জাহিদও শেষ জীবনে শিকার হয়েছিলেন তথাকথিত জাতীয়তাবাদী সুবিধাবাদি রাজনীতির। আনোয়ার জাহিদ বেঁচে থাকলে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধের রাজনীতিকদের এখন পথ হারাতে হতো না।
আনোয়ার জাহিদের স্মৃতিচারণ করে এম. নাজিমউদ্দিন আল আজাদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি ইতিহাসে এক ধ্রুবতারার নাম আনোয়ার জাহিদ। নীতিহীন রাজনীতির যুগে তিনি ছিলেন অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয়। এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মরহুম আনোয়ার জাহিদ ছিলেন সংগ্রামী জাতীয়তাবাদী নেতা ও দেশপ্রেমিক । এক সময়ের খ্যাতিমান সাংবাদিক। তারমতো মেধাবী ও দেশপ্রেমিক রাজনীতিকদের ব্যবহার করে প্রয়োজন শেষে যারা ছিটকে ফেলেছেন ইতিহাস তাদের ক্ষমা করেনি। তারা এখন পদে পদে অপমানিত হচ্ছেন। মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, আনোয়ার জাহিদ নীতিহীন রাজনীতির যুগে তিনি সততা ও মেধাভিত্তিক রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র। যে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির জন্য আনোয়ার জাহিদ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন তারা তাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আনোয়ার জাহিদ ছাত্রজীবনে নিখিল পূর্বপাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের ঝিনাইদহ মহকুমার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৫২ ভাষা আন্দোলনে ঝিনাইদহে ছাত্রআন্দোলন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৫৪ সালে পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদান করেন। ৫৬ সালে রাজশাহী সরকারী কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। ৫৭ সালে পূর্বপাকিস্তান যুবলীগের সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। ৬২ সালে ছাত্ররাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে সাংবাদিকতা জীবনে প্রবেশ করেন। প্রখ্যাত আইনজীবী কামরুন নাহার লাইলীর সাথে রাজবন্দী অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে বিবাহ সম্পাদন করা হয়। ৬৫ সালে জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ৬৮ সালে যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৯ এর গণআন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রাখেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সরকারের তথ্যমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপির চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়াপারসনের তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। ৭ দলীয় এবং ৪ দলীয় জোট গঠনে অন্যতম রূপকারের ভূমিকা পালন করেন।
সাংবাদিক হিসাবেও আনোয়ার জাহিদ অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯ বছর বয়সে দৈনিক ইত্তেহাদের সহকারী সম্পাদক, অর্ধ সাপ্তাহিক ধূমকেতুর সহকারী সম্পাদক, দৈনিক সংবাদের সহকারী সম্পাদক, দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী সম্পাদক, ইংরেজী সাপ্তাহিক হলিডের উপ-সম্পাদক, সাপ্তাহিক গণবাংলার নির্বাহী সম্পাদক, ইংরেজী ডেইলি পিপলসের বার্তা সম্পাদক ও বাংলাদেশ টাইমস’র গুরুত্বপূর্ণপদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি ইনকিলাব টেলিভিশন (আইটিভি)-প্রধান নির্বাহী ও দৈনিক ইনকিলাবের উপদেষ্টা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিক জীবনে আনোয়ার জাহিদ শুধু সাংবাদিকতাই করেননি সাংবাদিকদের নেতৃত্বও দিয়েছেন। ৬২, ৬৩, ৬৪ সালে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর সাধারন সম্পাদক, ৬৫, ৬৬ সালে সহ-সভাপতি ও ৭৮, ৮৩ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
স্মৃতি সংসদের সভাপতি মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা'র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করবেন বিএলডিপি চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, লেবার পার্টি হামদুল্লাহ আল মেহেদী, সৈয়দ মইনুজ্জামান লিটু, রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজলুর রহমান আমিনী, বাংলাদেশ ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস্ মুভমেন্ট যুগ্ম মহাসচিব নবাব সালেহ আহমেদ খান, শেরে বাংলা গবেষণা পরিষদের মহাসচিব আর কে রিপন, অগ্রগামী ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক গোলাম ফারুক মজনু প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন