আফগানিস্তানে তালেবানের অগ্রযাত্রার মুখে ঘরবাড়ি ছেড়ে হাজারো মানুষের পলায়ন এবং অনাহারে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ‘মানবিক বিপর্যয়’ ঘনিয়ে আসার সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থাগুলো। আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার, তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাত এবং লস্কর গাও তালেবান সদ্যই দখল করেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাস আফগানিস্তান থেকে তাদের কর্মীদের সরিয়ে নিতে সেনা পাঠাচ্ছে। যদিও জাতিসংঘ বলেছে, তাদের ৩২০ জন কর্মী দেশটিতে থাকবে। জাতিসংঘে এক ব্রিফিংয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থম্পসন ফিরি বলেন, “আমরা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটা এবং বিপুল সংখ্যক মানুষ অচিরেইক্ষুধাপীড়িত হওয়ার আশঙ্কা করছিৃপরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে তাতে সামগ্রিকভাবে মানবিক বিপর্যয়ের আলামতই পাওয়া যাচ্ছে।” জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র সাবিয়া মান্তু এক হিসাব দিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তানে গত মে মাস থেকে ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এদের ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু। আরেক জাতিসংঘ কর্মকর্তা বলেন, তালেবানের হামলার মুখে হাজার হাজার মানুষ পল্লী এলাকাগুলো থেকে পালিয়ে রাজধানী কাবুল ও অন্যান্য শহর এলাকায় চলে যাচ্ছে আশ্রয়ের খোঁজে। “তারা খোলা আকাশের নিচে, পার্কে, জনসমাগম এলাকায় ঘুমাচ্ছে। তাদের জন্য একটি আশ্রয় খুঁজে বের করাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়”, বলেন জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের মুখপাত্র জেনস লার্কে। পলায়নপর আফগানদের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ। কাবুলের উপকণ্ঠে অস্থায়ী শিবির স্থাপন করা হয়েছে। আফগানিস্তানে অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হওয়া অনেকেই রাজধানী কাবুলকে নিরাপদ আশ্রয় মনে করে সেখানে উপস্থিত হচ্ছে। ওদিকে, গত দুই তিন মাসে আফগানিস্তানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ট্রমাগ্রস্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা। তিনি চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহে ঘাটতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, একসঙ্গে বহু সংখ্যক হতাহত মানুষ সামাল দেওয়ার জন্য চিকিৎসাকর্মীদেরকে সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন