প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে আদালত অবমাননাকর ফেসবুক পোস্ট দেয়ার ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সদস্য ব্যারিস্টার মো. আশরাফুর ইসলাম আশরাফ। লিখিত ক্ষমা প্রার্থনার প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ আবেদনটি মঞ্জুর করেন। আদালত তার নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করে আদালত অবমাননার রুল নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আইন পেশা থেকে তাকে বরখাস্তের আদেশও প্রত্যাহার করেন।
শুনানিকালে সংযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফ তরুণ আইনজীবী। তার সামনে অনেক দূর যেতে হবে। তিনি ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাকে ক্ষমা করে দিন। আদালতে ব্যারিস্টার আশরাফের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আওসাফুর রহমান।
এর আগে গত ১৫ জুলাই প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুর ইসলামকে তলব করেন আপিল বিভাগ। গত ৮ আগস্ট তাকে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে তার ফেসবুক একাউন্ট বিটিআরসিকে ব্লক করে রাখতে বলা হয়।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। ওইদিন আদালতের আদেশ পড়ে শোনান আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। আদালত বলেন, ফেসবুকে এ ধরণের পোস্ট আদালতের প্রতি অনাস্থার সামিল। এটা আদালত অবমাননা। তিনি সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতিকে আঘাত করেছেন।
ওইদিন প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের ওই আইনজীবীর ফেসবুক পোস্ট আপিল বিভাগের নজরে আনেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি আদালতকে বলেন, একটি বিষয় আপনাদের নজরে আনতে চাই। একজন আইনজীবী প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেসবুক পোস্ট পড়ে শোনান। ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাই’ শিরোনামে ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, কারণ যেখানে মাননীয় বিচারপতিগণ তাদের স্ব স্ব থাকার জায়গায় বসে বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারতেন এবং পারেন কিন্তু প্রধান বিচারপতি মহোদয় সে ব্যবস্থা না করে, আইনজীবী এবং তাদের পরিবার-পরিজনকে জীবন-ধারণের চরম সঙ্কটে পতিত করেছেন। অতএব, এই মহান দায়িত্বে থাকার কোনো উনার অধিকার নাই।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন