শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

হতদরিদ্রদের খাওয়ানোর সাজা দিলেন বিচারক

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

যশোরে মাদক মামলার আসামি আলমগীর হোসেনকে নয় শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিমাসে কমপক্ষে পাঁচ হতদরিদ্রকে দুপুরের আহার করাতে হবে। যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস এই আদেশ দিয়েছেন। আসামি আলমগীর হোসেন শার্শা উপজেলার রাড়িপুকুর গ্রামের মৃত রজব আলী গাজীর ছেলে।

নয় শর্ত হলো, সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত হতে পারবেন না। শান্তি বজায় রেখে সকলের সাথে সদাচারণ করতে হবে। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যে কোনো সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সাথে চলাফেরা বা মেলামেশা করা যাবে না। একই সাথে আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত¡াবধানে থেকে সার্বিক অবস্থা অবহিত করতে হবে। এই প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। প্রবেশনকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ১০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচিত্র দেখতে হবে। সেগুলো হলো, একাত্তরের যীশু, নদীর নাম মধুমতি, হুলিয়া, প্রত্যাবর্তন, পতাকা, আগামী, একজন মুক্তিযোদ্ধা, ধুসর, আমরা তোমাদের ভুলবোনা, শরৎ একাত্তর। প্রবেশনকালীন সময়ে তার ১০টি বৃক্ষরোপন করতে হবে। একই সাথে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫ জন হতদরিদ্রকে দুপুরের আহার করাতে হবে।
রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর অভিযুক্তের হাজিরার কোন ত্রুটি নেই। তার বিরুদ্ধে আর কোন মামলাও নেই। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদান করা হয়েছে।
জেলা যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের এপিপি লতিফা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের জানান, মামলায় আটকের পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে আলমগীর হাজিরা কামাই দেননি। এ মামলা ছাড়া তার আর কোনো মামলাও নেই। দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্যে শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। তিনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহে আরো চারটি মামলায় ব্যতিক্রমী এমন রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা আইনজী সমিতির সভাপতি কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস যশোরে যোগদানের পর থেকে আসামি পুনর্বাসনের জন্য এক ব্যতিক্রমী রায় ঘোষণা করে যাচ্ছেন। আসামিদের পুনর্বাসনের জন্যে এ ধরনের রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে ১৯ জুন রাতে যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া থেকে নয় বোতল ফেনসিডিলসহ আলমগীরকে আটক করে চাঁচড়া ফাড়ি পুলিশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন