দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশপথ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার পর অবশেষে আজ সকাল থেকে পরীক্ষামূলক ফেরি চলবে। তবে দীর্ঘ দিন ফেরি বন্ধ থাকায় মাদারীপুরসহ ২১ জেলার মানুষের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেকে প্রচন্ড স্রোতের মধ্যেও লঞ্চ ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। এদিকে নতুন রুট হিসেবে শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দিতে একটি ঘাট প্রস্তুত হলেও অজ্ঞাত কারণে ফেরি চলাচল শুরু হয়নি।
অন্যদিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি বন্ধ থাকায় বিকল্প রুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দিয়ে যাতায়াত করছে অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবাহন। ওই পথে দীর্ঘ সময় লাগছে। একই সাথে দ্বিগুণ ভাড়াও গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এর আগে পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে দুর্ঘটনা এড়ানোর কথা বলে এ বছরের ১৮ আগস্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন বিআইডব্লিটিসি কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ’র একটি বিশেষজ্ঞ দল সার্ভে করেছে। এসময় তারা নদীতে স্রোতের গতিবেগ কম দেখতে পান। এর ফলে আজ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালানো সফল হলে সকল ফেরি চালানো হবে। এজন্য ফেরিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি ঘাট সূত্র জানায়, শিমুলিয়া নৌপথে ১৮টি ফেরি রয়েছে। গত জুলাই ও আগস্ট মাসে পদ্মায় তীব্র স্রোত অব্যাহত থাকায় ২৪ দিনে পদ্মা সেতুর তিনটি পিলারে চার বার ফেরির ধাক্কা লাগে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন যাত্রী। ফেরির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুর পাইল ক্যাপ। এই পরিস্থিতিতে নৌপথে সব ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ১৮ আগস্ট দুপুরের পর থেকে এই নৌপথে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফেরি বন্ধের প্রায় দেড় মাসে পদ্মায় স্রোতের গতি না কমলেও পানির উচ্চতা অনেকটা কমেছে। শিমুুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ার পর বিকল্প রুট হিসেবে বাংলাবাজার ঘাটের পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি নৌরুট ভাবা হয়েছিল। ওই রুটে ফেরি চালুর জন্য মাঝিকান্দিতে ফেরির পন্টুন বসানো হলেও তা চালু হয়নি। এই রুটে নৌ-চ্যানেলে একাধিক ডুবোচর থাকায় ফেরি চালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানির উচ্চতা আগের তুলনায় কমেছে। সেই সাথে স্রোতও আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। ফলে ফেরি চলাচল করার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আজ থেকে ট্রাই করা হবে ফেরি চলাচলের।
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাটের ম্যানেজার মো. সালাহউদ্দিন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালানোর জন্য ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দু’ঘাট থেকে দুটো ডাম্ব ফেরি চালানো হবে। যদি পরিবেশ অনুক‚লে হয়, তাহলে পরের দিন থেকে প্রতিনিয়ত ফেরি চলাচল করা হবে।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, পদ্মা নদীতে স্রোতের গতিবেগ কমে এসেছে। সার্ভে ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আজ পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালানো হবে। সফল হলে ফেরি চলবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন