কুমিল্লার পূজা মন্ডপে মূর্তির কোলে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চৌমুহনী বাজারে শনিবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ধারা জারি করা হয়েছে।
শুক্রবার দূর্বৃত্তরা চৌমুহনী বাজারের কয়েকটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে। একইসময় হামলাকারীরা বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এতে পুলিশসহ ৩০জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৪৭জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার ভোরে চৌমুহনী ইসকন মন্দিরের পুকুর থেকে সুবেল চন্দ্র সাহার লাশ উদ্ধার করে মন্দিরের লোকজন। এদিকে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রশাসনের দায়ের করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মৃতদের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ নোয়াখালী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। তিনি সনাতন নেতাদের সাথে কথা বলে এ ঘটনার সুুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় চৌমুহনী কলেজ রোড, বস্তাগলি, ব্যাংক রোড’সহ বাজারের বিভিন্ন স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত জয়তুন সাহা কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার মুরাদনগর গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন কুমার সাহার ছেলে। তিনি পূজা উপলক্ষে চৌমুহনী এক আত্মীয়র বাড়িতে এসেছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর আড়াইটার হঠাৎ করে কয়েকশত লোক চৌমুহনী বাজারের কলেজ রোড ও ব্যাংক রোডে অবস্থিত বিজয়া সার্বজনীন, ইসকন মন্দির, খোদ বাড়ি মন্দির, লোকনাথ মন্দির, দশবূজা মন্দিরসহ কয়েকটি মন্দিরে দফায় দফায় হামলা চালায়। এসময় তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে হামলা শিকার হন বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান সিকদার, এসআই রুবেল মিয়াসহ অন্তত ৭-৮জন পুলিশ সদস্য। হামলাকারিরা মন্দিরগুলোতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, দু’টি গাড়ীতে আগুন ও দোকান-পাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ টিয়ারসেল ও শর্টগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চৌমুহনী পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন