কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল ইসলাম (৩৭) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের চর বানিয়াপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামি আজিজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরস্পর ভালোবেসে ২০১৩ সালে বিয়ে করেন। আপত্তি থাকলেও পরে জেসমিনের পরিবার তার মুখের দিকে তাকিয়ে আজিজুল ইসলামকে মেনে নেয়। কিন্তু আজিজুল ইসলামের পরিবার জেসমিনকে মেনে নেয়নি।
কিছুদিন পর থেকে আজিজুল ইসলাম জেসমিনের ওপর অত্যাচার শুরু করেন। সব অত্যাচার, নির্যাতন, দুর্ব্যবহার সহ্য করেও জেসমিন সংসার করতে থাকেন। এ অবস্থায় জেসমিন অন্তঃসত্ত্বা হন।
আরও জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ের সাত-আট মাস পর গভীর রাতে জেসমিন আক্তারকে নির্মম নির্যাতন ও মারধর করে হত্যা করেন স্বামী আজিজুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে কুমারখালী থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। তখন আজিজুল ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যান। পরে জেসমিনের বাবা বাদী হয়ে আজিজুল ইসলামসহ তার পরিবারের পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ৩১ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। সে মোতাবেক রোববার আদালত এ রায় দেন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত জেসমিন আক্তারের স্বজনরা বলেন, জেসমিনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করেছে আজিজুল। ছয় বছর পর আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে আমরা খুবই খুশি। তবে তার ফাঁসি হলে আমরা আরও বেশি খুশি হতাম।
রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আজিজুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন