শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

সপ্তাহব্যাপী সামিটে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আগ্রহ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৫০ পিএম

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’-এ বিনিয়োগকারীরা বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। সোমবার (১ নভেম্বর) ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৬ অক্টোবর ১ নভেম্বর পর্যন্ত এই সামিট অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়াললি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অবকাঠামো, আইটি, চামড়াজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, এগ্রো অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, প্লাস্টিক পণ্য, এফএমসিজি (ফার্স্ট মুভিং কনজিউমার গুডস) এবং জুট ও টেক্সটাইল পণ্য নিয় এই ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় ৩৮টি দেশ।

সংবাদ সম্মেলনে সামিটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। তিনি বলেন, আমরা সামিটে ৪৫০টি বি টু বি (বিজনেস টু বিজনেস) বৈঠকের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। এর মধ্যে ৩৬৯টি বি টু বি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সশরীরে সামিটে অংশগ্রহণ করেছেন ৬০০ বেশি।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সামিটে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন। এর মধ্যে চীনের একটি প্রতিষ্ঠান অবকাঠামো খাতে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা এটির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বিস্তারিত জানাবো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।

বিনিয়োগকারীরা কোন কোন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন সে তথ্যও তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, যৌথ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১৩টি দেশের ২০টি আগ্রহ পাওয়া গেছে। ছয়টি দেশ থেকে ছয়টি সরাসরি বিনিয়োগের আগ্রহ দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ১৪টি দেশে ২৬টি পণ্য রফতানির আগ্রহ দেখিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ১৩টি দেশের ২৯টি পণ্য আমদানির আগ্রহ দেখানো হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) খুবই সহায়ক। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মেইন জোর দিয়েছেন ইকোনমিক জোনে। এর আগে ছিল এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে। এখন ১০০টি ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে। ইকোনমিক জোনে সবকিছু কিন্তু ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। এখানে ১০ বছর কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না। ইকোনমিক জোনে শুল্কমুক্ত আমদানি করা হয়। সুতরাং এখানে ব্যাপক ছাড় সরকার দিয়েছে। ইকোনমিক জোন ও বেজার বাইরেও বিভিন্ন শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এফটিএ’র (মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির) জন্য হয় তো আমাদের গড় শুল্ক কমাতে হবে। সেটা আমরা এখনই কতোটা কমাতে পারবো, সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ এনবিআর’র একটা উদ্দেশ্য শিল্পায়ন, আর একটা হচ্ছে দেশের যে অর্থায়ন অর্থাৎ বাজেট করার সাপোর্ট দিতে হবে। রেভিনিউ বাজেট, উন্নয়ন বাজেট প্রথমত কিন্তু এনবিআর’র যে আয় হয় সেখান থেকে যায়। কিছু বৈদেশিক সহায়তা আসে। সুতরাং এটা আমাদের গ্রাজুয়ালি কমাতে হবে। কারণ এফটিএ’র প্রথম কথাই হচ্ছে দুই দেশেই তাদের শুল্ক শ‚ন্যে নামিয়ে আনবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, ধরেন আমাদের গড় শুল্ক ১৪-১৫ শতাংশের মতো। যেসব দেশের সঙ্গে আমরা এফটিএ করতে চাচ্ছি তাদের গড় শুল্ক কোনটা হয় ৩ শতাংশ, ৪ শতাংশ, ৬ শতাংশ এমন। সুতরাং যদি ৬ শতাংশ কমায় আমাকে কমাতে হবে ১৫ শতাংশ। এতে তো আমার অনেক রেভিনিউ লস হবে। এটা হয়তো আমরা একসঙ্গে অনেক বেশি কমাতে পারবো না। ধীরে ধীরে কমাতে হবে। এখানে আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ আছে।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, কোনো বাছ-বিচার না করে যদি আমি শুল্ক শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনি, তখন আমাদের দেশের অনেক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ বাইরের পণ্যের সঙ্গে হয়তো আমাদের দেশের পণ্য প্রতিযোগিতা করতে পারবে না। সুতরাং আমাদের দেশে যে শিল্প গড়ে উঠেছে, সেটাকে প্রটেক্ট করতে হবে। সেটাকে যদি বাঁচিয়ে না রাখেন তাহলে আপনি রফতানি করবেন কি? সে কারণে অনেকগুলো পণ্যে চাইলেও শুল্ক কমানো যাবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন