মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রোববার বলেছেন যে, আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তালেবান এলে কাবুল থেকে পালিয়ে যান।
এছাড়াও, এই সপ্তাহান্তে একটি রক্ষণশীল মার্কিন থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, হাডসন ইনস্টিটিউট, আফগানিস্তানে অপারেশনের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তির বিষয়ে রিপোর্ট করেছে। তারা একে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান আলোচনাকে একটি বড় অগ্রগতি হিসাবে মূল্যায়ন করেছে।
‘সিবিএস ফেস দ্য নেশন’ টক-শোতে একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে, আফগানিস্তানের জন্য সাবেক মার্কিন বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ বলেছেন যে, বাইডেন প্রশাসন কাবুলে সরকারের পতন রোধ করতে আরও কিছু করতে পারত। সে প্রসঙ্গে রোববারের শোতে, সাক্ষাতকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে গনিকে কাবুলে থাকতে রাজি করার চেষ্টা করেছিলেন কিনা।
জবাবে ব্লিঙ্কেন বলেন, তিনি ১৪ আগস্ট রাতে গনির সাথে ফোনে কথা বলেছিলেন। কাবুলে একটি নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য তাকে চাপ দিয়েছিলেন, এই সরকারটি তালেবানদের নেতৃত্বে হলেও আফগান সমাজের সকল প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হতো। ‘গনি তাকে বলেছিলেন যে ‘তিনি এটি করতে প্রস্তুত ছিলেন, তবে তালেবানরা যদি রাজি না হয়, তবে তিনি মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে প্রস্তুত,’ ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, ‘এবং পরের দিনই তিনি আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যান।’
গনি আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তালেবানরা ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে। ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘সুতরাং, আমি গনির সাথে বহু সপ্তাহ, বহু মাস ধরে নিযুক্ত ছিলাম।’ তিনি যা করতে পারতের তা করেছেন কিনা জানতে চাইলে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক বলেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট আমেরিকা যা করেছে তা পর্যালোচনা করছে, ২০২০ সাল থেকে ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য তালেবানের সাথে একটি চুক্তি করেছিল। পর্যালোচনায় ‘আমাদের প্রশাসনের সময় আমরা যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলাম তা অন্তর্ভুক্ত করবে, কারণ গত কয়েক বছর থেকে আমাদের প্রতিটি সম্ভাব্য পাঠ শিখতে হবে’ এবং গত ২০ বছর থেকেও, তিনি বলেছিলেন।
এটি আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধ ছিল উল্লেখ করে সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন দীর্ঘতম যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, আমেরিকানদের আরেকটি প্রজন্মকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে মরতে হবে না। ‘এবং আমি মনে করি যখন এই সব স্থির হয়ে যায়, আমেরিকান জনগণ গভীরভাবে এটি চায় এবং আমাদের স্বার্থে,’ তিনি বলেছিলেন। ‘এদিকে, আমরা আমাদের চলমান প্রতিশ্রুতিগুলো রক্ষার জন্য আমরা যা করতে পারি তা করছি।’
এদিকে, আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে সম্ভাব্য মার্কিন-পাকিস্তান চুক্তির বিষয়ে হাডসন পর্যালোচনায় দাবি করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার চিহ্ন হিসাবে সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তিকে চিত্রিত করবে।’ পর্যালোচনার সাথে বিতরণ করা আরেকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বেশ কয়েকজন মার্কিন কূটনীতিক পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ‘এটা একটা ভুল হবে। পাকিস্তানের নীতিগুলো আমেরিকার জন্য হতাশাজনক, তবে পাকিস্তান মার্কিন নীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ রয়ে গেছে,’ প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে। এই সপ্তাহের শুরুতে, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স ফর পলিসি কলিন কাহল কংগ্রেসকে বলেছিলেন যে, পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার আকাশসীমায় প্রবেশাধিকার দিয়ে চলেছে এবং উভয় পক্ষ সেই অ্যাক্সেস খোলা রাখার বিষয়েও কথা বলছে। সূত্র: ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন