নীলফামারীর সৈয়দপুরে দফায় দফায় বেড়েছে সব ধরনের গরুর খাদ্যের দাম। ফলে শত শত খামারি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অস্বাভাবিক গরুর খাদ্যের দাম বাড়ায় গরু মোটাতাজাকরণ কমিয়ে দিয়েছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ খামারি ব্যবসা ছেড়ে শুরু করেছেন গবাদিপশুর ব্যবসা। তারা এক হাটে গরু কিনে অন্য হাটে বিক্রি করছেন। এ উপজেলায় গরু মোটাতাজাকরণ খামার রয়েছে ২৭৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধিত খামার মাত্র ৭৪টি। এমন তথ্য জানিয়েছেন সৈয়দপুর প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।
শহরে বাঁশবাড়ী মহল্লায় অবস্থিত মেসার্স ইউসুফ ডেইরি ফার্ম ও হৃষ্টপুষ্টকরণ খামারের স্বত্বাধিকারী রোটারিয়ান জামিল আশরাফ মিন্টু বলেন, আমার খামারে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয় প্রাকৃতিক উপায়ে। খামারে গরুর খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয় চালের খুদ, খেসারি-মসুর ডাল, খড় ও চোকর (গমের খোসা)। এরই মধ্যে এগুলোর দাম দ্বিগুণ ও দেড়গুণ বেড়েছে। বর্তমানে আমার খামারে ২০০ গরুর জায়গায় মাত্র ৫০টি গরু লালন-পালন করছি। এভাবেই প্রতিটি খামারে গবাদিপশুর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে গরু লালন-পালন কমিয়ে দিয়ে একহাট থেকে গরু কিনে আরেক হাটে বিক্রি করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছি। সেই সঙ্গে লোকসান সামাল দিতে খামারে ৯ জনের জায়গায় বর্তমানে ৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
এর মধ্যে দু’জনকে রাখা হয়েছে গরুর ঘাস সংগ্রহ ও কাটার জন্য। শহরের তামান্না মোড়ের পাইকারি ও খুচরা পশু খাদ্য বিক্রেতা মাকসুদ অ্যান্ড সন্সের মালিক মাহমুদ আলী জানান, প্রতিটি পশু খাদ্যের বস্তায় ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা দাম বেড়েছে।
একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গবাদি পশুর ওষুধের দাম। শহরের সাহেবপাড়ার মাইদুল ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী কাঞ্চন বলেন, বর্তমানে কাড়ি (খড়) বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা পণ দরে (৮০ টি আঁটির দাম)।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক জানান, নানা সমস্যার কারণে এরই মধ্যে অনেকেই খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। গাভির খামার থাকলেও দুধের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না খামারিরা। এ নিয়েও খামারিদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। পশু লালন-পালনে উৎসাহ ক্রমান্বয়ে হারিয়ে ফেলছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন