সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন ও শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্যের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। গতকাল রাত ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় দেশ ত্যাগের জন্য তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান করছিলেন। বিমানবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এমিরেটসের রাত ১১টা ২০ মিনিটের ফ্লাইটে উঠবেন মুরাদ হাসান। তার গন্তব্য কানাডার টরন্টো। তিনি রাত ৯টা ২৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে পৌঁছান।
সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার তিনি একটি টিকিট কাটেন। এছাড়াও প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডা. মুরাদের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন মঙ্গলবার তার কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুরাদ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে গতকাল সাংসদ মুরাদ হাসানের বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সচিবালয়ের নিজ দফতরে বলেন, এ সম্পর্কে তিনি জানেন না। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এগুলো আমার জানা নেই। উনি বিদেশ যাবেন নাকি স্বদেশে থাকবেন, সেটা তার ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।
এদিকে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুরাদ হাসানের অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মন্ত্রিত্ব হারানো মুরাদ হাসানের নাম তথ্য মন্ত্রণালয়ের নামফলক থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকাও তার নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তার নাম নেই।
বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে মুরাদ হাসান আলোচনা-সমালোচনায় এসেছেন। গত সোমবার দুপুরে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে ডা. মুরাদ হাসানের নারী বিদ্বেষী বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর ওই দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের। পরদিন মঙ্গলবার সকালেই পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান। পরে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর প্রেসিডেন্টের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বিষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়। এর আগে মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন