বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবে নেটিজেনদের শুভেচ্ছা

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ৮:৪৮ পিএম | আপডেট : ৯:০৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১

আজ ২৫ ডিসেম্বর। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। অন্য বছরের তুলনায় এবার বড়দিনের আয়োজনে চাকচিক্য কিছুটা কম। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা। এই ধর্মীয় উৎসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আবেগ-অনুভুতি প্রকাশ, শুভেচ্ছা বিনিময় ও স্মৃতিচারণ করছেন নেটিজেনরা।

বড়দিন উপলক্ষে নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদেল তার ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘শুভ বড়দিন বয়ে আনুক অবারিত কল্যাণ, ত্যাগ, সীমাহীন শান্তি এবং চির ঐক্যের বার্তা। সমস্ত খ্রিষ্টধর্মীয় জনসাধারণকে জানাই শুভ বড়দিনের অসাম্প্রদায়িক শুভেচ্ছা।’

স্মৃতিচারণ করে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর লিখেছেন, কুমিল্লায় বেড়ে উঠার সময় পরিবেশ পেয়েছি সুঠাম সুস্থ্য। একই মহল্লায় মুসলিম খ্রীষ্টান হিন্দু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সামাজিক সম্পর্কগুলো এখনো মানসপটে ভাসে। আগেও লিখেছি আবারও লিখছি, বারবার লিখবো। কুমিল্লা মাতৃমঙ্গলে আমার জন্ম। দাই’মা ছিলেন প্রয়াত শ্রদ্ধেয়া সৌদামিনী বড়ুয়া। পড়াশোনা শুরু করেছি রোমান ক্যাথলিক চার্চের আন্ডারে আওয়ার লেডী অব ফাতিমা গার্লস হাই স্কুলে। আমাদের বাসার পাশেই ডে’লনী হাউস। বিশাল টেরিটোরি নিয়ে আওয়ার লেডীর হোষ্টেল ছিল, এখনো আছে। আমার সিস্টার বা শিক্ষক শিক্ষয়িত্রীগণ ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের। ক্রিশ্চিয়ান মিশন স্কুল সম্বন্ধে বিরুপ ধারনা ছিল অন্যান্য স্কুলের শিক্ষক মহোদয়দের। আমার ভাইবোনদের মোট পাঁচজন কেজি থেকে আওয়ার লেডীর স্টুডেন্ট ছিলাম। ইসলামী শিক্ষার জন্য আমরা যে স্যারকে পেয়েছিলাম উনাকে মোল্লা স্যারই সম্বোধন করতাম। পাশের বাসায় এ্যানি আপা সিলভী আপা অ্যালেন আপা’রা থাকতেন, আন্টি এবং ভাইয়াদের আদর স্নেহও পেয়েছি। ইলেন কুঁইয়া ছিলেন আমার প্রিয় শিক্ষিকা। আমাদের বাসায় ভাড়াটিয়া ছিল রড্রিকস ফ্যামিলি। পেছনের বাসা কাবেরী হাউসে থাকতেন ম্যাকেট ভাইরা। বর্তমানে কুমিল্লার স্বনামধন্য শিক্ষক হিউবার্ট আমার ক্লাসমেট, ওর ছোট ভাই মিকি’ও জনপ্রিয় শিক্ষক। বাসার কাছে হওয়ায় চার্চের সাথে ছিল নিবিড় সম্পর্ক। ইস্টার সানডে থেকে শুরু করে সব ঈদ পূজা বূদ্ধ পূর্ণিমা সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মহল্লায় একটা আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করতো। রড্রিকস পরিবারের বড়দিনের উৎসব হতো আমাদের বাসার নীচতলায়। ছোট্ট ঝাউ গাছে লাইটিং করে আমার অপেক্ষা করতাম কখন সান্তাক্লজ আসবেন উপহার নিয়ে !! এর মধ্যে ঘুমিয়ে যেতাম, সকালে আন্টি ঠিকই চকলেট সহ নানান উপহার সামগ্রী রেখে দিতেন আমাদের জন্য। চার্চ থেকে শুরু করে আমার শিক্ষকদের আদরের চূড়ান্ত আবেগ খুঁজে পেতাম বড়দিনে। এসব গল্প অনেক স্মৃতিময়। সেই সময়ের পরিবেশ বাংলাদেশে আর নেই। ধর্মীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সৌহার্দ্যে এখন শুধুই প্রশ্নবোধক সিগন্যাল। যে দেখেনি, যে উপলদ্ধি করেনি সামাজিকতা কোন লেভেলের হতে পারে, তাদের বোঝানোর ক্ষমতাও নেই, চেষ্টাও করবোনা। যে শিষ্টাচার শৃঙ্খলা সামাজিকতায় বেড়ে উঠেছি সেগুলো এখন তথাকথিত এগ্রেসিভ গোঁয়াড় নেটিজেনদের আক্রমনে রক্তাক্ত। শৈশবে শিশুমন শুধু ভালবাসার আশ্রয়টাই খুঁজেছে, এখনো সেই ডিসিপ্লিনেই আছি। আজ মেরী ক্রিসমাস। আমি লেবানন সফরে হারিসায় গিয়ে দেখে এসেছি মাদার মেরী’র বাসস্থান, যেখান থেকে খ্রীষ্টধর্মের প্রবর্তক জেসাসকে পেটে ধরে বিবি মরিয়ম জেরুজালেমের বেথেলহামের দিকে রওয়ানা হয়েছিলেন তিন হাজার মিটার উঁচু এবরো খেবরো পাহাড় থেকে নেমে। আজ খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এই বয়সে এসেও মনে পড়ে সান্তাক্লজের উপহারের হাতছানির কথা, শৈশবের স্মৃতি রোমন্থনে ফিরে যাই এক অভাবনীয় স্বপ্নের দেশে। খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী সব্বাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা। এই দেশটায় সবাই আনন্দে থাকুক, এটাই চাওয়া। ভালবাসা অবিরাম…’

সাংবাদিক ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘খ্রিস্টান ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নবী হযরত ঈসা (আ:) এর পবিত্র জন্মদিনে সবাইকে মোবারকবাদ জানাই!’

শুভেচ্ছা জানিয়ে ফারজানা আখি লিখেছেন, ‘শুভ বড়দিন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সকলের প্রতি রইলো উষ্ণ শুভেচ্ছা।’

এমডি পারভেজ হোসাইনের প্রত্যাশা, ‘হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবাই শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার বন্ধনে আবদ্ধ হোক। শুভ বড়দিন..’

জাহিদ খান লিখেছেন, ‘শুভ বড়দিন। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি সম্ভাষণ প্রজ্জ্বলিত হোক; নির্বাপিত হোক বিদ্বেষ আগুন।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন