বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিদায়ী বছরকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘২০২১ ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের সহ্যসীমা প্রায় অতিক্রম করে যাওয়ার বছর।’ গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার-পরিস্থিতি ২০২১ : আসকের পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার আসকের তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
আসকের মহাসচিব নূর খান লিটন বলেন, ২০২১ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে বর্বরতার সঙ্গে তুলনা করা যায়। সারা দেশে এখন ভয়ের চাদরে আবৃত। বিচারহীনতা, বিচারবহির্ভ‚ত হত্যাকান্ড, গুম, খুন, ধর্ষণসহ সমাজে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে, যা ভয়ঙ্কর ভীতিকর। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ নানা কারণে বছরজুড়ে মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষক, নারী-অধিকারকর্মী, বিরোধী দল, সমালোচক ও আইনজীবীদের জন্য পরিস্থিতি প্রতিক‚লে ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে বিচারবহির্ভ‚ত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৮০ জন। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা গুলিবিনিময়ে নিহত হয়েছেন ৫১ জন। বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নিহত হয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে গ্রেফতারের পর শারীরিক নির্যাতনে ৬ জন, গ্রেফতারের আগে ১ জন ও হার্ট অ্যাটাকে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের কারাগারগুলোতে এ বছর অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৮১ জন। এর মধ্যে কয়েদী ২৯ জন এবং হাজতি ৫২ জন।
আসকের পরিসংখ্যানে তুলে ধরা হয়, ২০২১ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হন ৭ জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৬ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন ১ জন।
আসক বলছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের অধিকার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত উদ্বেগজনক ছিল ২০২১ সাল। হিন্দু স¤প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীর দিন ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়ার দীঘি পূজামন্ডপে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ও তার পরপর চাঁদপুর, নোয়াখালী, ল²ীপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, মারধরের ঘটনা ঘটে। ২০২১ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু স¤প্রদায়ের ২০৪টি প্রতিমা, পূজামন্ডপ, মন্দির ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া হিন্দু স¤প্রদায়ের ১৮৪টি বাড়িঘর ও ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সা¤প্রদায়িক হামলার ঘটনায় হিন্দু স¤প্রদায়ের ৩ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৩০০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া বৌদ্ধ স¤প্রদায়ের ১টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বছরজুড়েই ভিন্নমত দমন করার লক্ষ্যে হয়রানিমূলক মামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতনের ঘটনা চলেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা ছিল কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৪টি। এর মধ্যে বিভিন্ন থানায় ৮৮৩টি এবং সরাসরি আদালতে ২৫১টি মামলা হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল ও বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের রোষানলে পড়ে হামলা, মামলাসহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরাও। ২০২১ সালে হয়রানিসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২১০ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে বোরহান উদ্দিন মোজাক্কির নামে একজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের ভ‚মিকা ও স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশের অভিযোগে গত ১৭ মে একজন সাংবাদিককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করেন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হন একটি টিভির খুলনার ব্যুরো প্রধান, রংপুরে এক টিভি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আসকের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী সভা-সমাবেশে যোগ দেওয়ার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু সা¤প্রতিক বছরগুলোতে পুলিশ বা সরকার সমর্থক দলগুলোর নেতাকর্মীদের দ্বারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধাদানের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ছিল গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া করার দাবিতে ২৩ নভেম্বর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। বিরোধীদলসমূহের কর্মসূচির অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগও ছিল অনেক।
করোনা মহামারির মধ্যে থেমে ছিল না ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, পারিবারিক নির্যাতন, সালিশ ও ফতোয়াসহ নারীর প্রতি বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঘটনা। নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর ও বিদ্বেষমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে তথ্য ও স¤প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের কিছু বক্তব্যে। যার পরিপ্রেক্ষিতে জনক্ষোভের মুখে গত ৭ ডিসেম্বর তিনি মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে সারা দেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১ হাজার ৩২১ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৭ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ৯ জন। আগের বছর ২০২০ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মোট ১ হাজার ৬২৭ জন নারী এবং ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪১৩।
আসকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করণের শিকার হয়েছেন ১২৮ নারী। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন ৭৭ জন পুরুষ। এ বছর উত্ত্যক্ত করণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ১২ জন নারী। এ ছাড়া যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ নারী ও ৫ পুরুষসহ খুন হয়েছেন মোট ৮ জন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৬৪০ নারী। এদের মধ্যে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ২১০ জন। নির্যাতনের কারণে মারা যান ৩৭২ জন এবং আত্মহত্যা করেন ১৪২ জন। আগের বছর ২০২০ সালে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন ৫৫৪ জন নারী।
২০২১ সালে সালিশের মাধ্যমে ১২ জন নারী নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে সালিশে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন ৩ জন এবং নির্যাতন পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করেন ২ জন। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮। এছাড়া এ বছর ৪৫ জন নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের পরবর্তী সময়ে মারা যান ৩ জন নারী। অন্যদিকে অ্যাসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছেন ২৩ নারী।
আসকের পরিসংখ্যানে জানানো হয়, শিশু অধিকারের ক্ষেত্রেও ২০২১ সালের চিত্র ছিল হতাশজনক। এ বছর মোট ৫৯৬ শিশু শারীরিক নির্যাতনের কারণে মৃত্যু, ধর্ষণের পরে হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা, অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ বিভিন্ন কারণে নিহত হয়। আগের বছর ২০২০ সালে শিশু নিহতের সংখ্যা ছিল ৫৮৯। এছাড়াও চলতি বছর বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয় ১ হাজার ৪২৬ জন শিশু।
মহামারিতে অভিবাসী শ্রমিকরা ব্যাপক বিপদ ও হয়রানির মুখে পড়েন। সউদী আরব, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের নাগরিকদের ঝুঁকিপূর্ণ সাগর পাড়ি দিয়ে অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা এখনও অব্যাহত আছে।
২০২১ সালে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যুহারের ব্যাপকতা লক্ষ্য করা গেছে। জেলা হাসপাতালগুলো করোনা রোগীর চিকিৎসা প্রদানে হিমশিম খেয়েছে। পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও আইসিইউ-এর অভাবে অনেক করোনা রোগী সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে আসক বলে, ২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও বছর শেষে দেখা যাচ্ছে জনসংখ্যার ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। পূর্ণ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন মাত্র ২৮ দশমিক ২ শতাংশ।
২০২১ সালে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বছরটিতে প্রায় ৯৩২টি রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এসব রাজনৈতিক সংঘাতে মোট ১৫৭ জন নিহত এবং প্রায় ১০ হাজার ৮৩৩ জন আহত হন। বিগত বছরে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় ৬৭২টি সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ২০১ জন। এ ছাড়া পৌর এবং সিটি করর্পোরেশন নির্বাচন ঘিরে ৮৩টি সহিংসতার ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং প্রায় ৭৮৮ জন আহত হন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোাদীর বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের ডাকা বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের কয়েকটি স্থানে ব্যাপক সহিংসতা ও সংঘষের ঘটনায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তির আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
২০২১ সালে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ১৬ জনসহ সীমান্তে মোট ১৮ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
আসকের প্রতিবেদন জানানো হয়, গত বছর গণপিটুনির ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮ জন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণপিটুনির ক্ষেত্রে আইন থাকলেও বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত কোনো আইন নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আসকের সহকারী সমন্বয়কারী অনির্বাণ সাহা মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ১০টি সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভ‚ত হত্যাকান্ডসহ অন্যান্য সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা, এ পর্যন্ত সংঘটিত সব ঘটনার তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা, নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করতে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক আইনগুলোতে পরিবর্তন আনা, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিজস্ব আচার-বিশ্বাস ও রীতি-চর্চার অধিকারসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া, শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম ব্যক্তি, আদিবাসী, দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও শ্রমজীবী মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন-২০০৯ সংশোধন করা, নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলা এবং গ্রাম ও শহরের সব মানুষকে সমতার ভিত্তিতে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশও করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আসকের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল, পরিচালক নীনা গোস্বামী ও সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল করিম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন