শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতে জামিয়াসহ সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে কাজ করা সংস্থাগুলোর অনুদানের পথ বন্ধ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৭ পিএম

মাদার টেরিজা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অফ চ্যারিটি সম্পর্কে 'আপত্তিকর' বা 'বিরূপ' তথ্য মেলার অভিযোগে দিন কয়েক আগেই ২৫০টি দেশ থেকে ওই সংস্থায় অনুদান আসা বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্র। শনিবার বিদেশি অনুদান পাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল ওই সংস্থাটি-সহ প্রায় ৬ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার।

যার অর্থ, নতুন বছরের শুরুতেই বিদেশি অনুদান আসার পথ বন্ধ হয়ে গেল অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া ট্রাস্ট, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, লেপ্রসি মিশন, ইন্ডিয়ান ইসলামিক কালচারের মতো এনজিও-র। বাতিলের খাতায় একদিনেই নাম উঠে গেল আইআইটি দিল্লি, নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি, ইন্ডিয়া হ্যাবিটেট সেন্টার, লেডি শ্রীরান কলেজ ফর উইমেন কিংবা দিল্লি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো দিল্লির প্রথম সারির এক গুচ্ছ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এই তালিকার একটা বড় অংশ সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে কাজ করা এনজিও, তাই কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদির সরকার বেছে বেছে এদেরই টার্গেট করছে কি না, প্রশ্নটা উঠেই গেল।

বিদেশি অনুদান সংগ্রহে সব সংস্থারই ফরেন কনট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (এফসিআরএ) লাইসেন্স লাগে। ৩১ ডিসেম্বর ছিল সেই লাইসেন্স রিনিউ করার শেষ দিন। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, বারবার মনে করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও ৫৭৮৯ টি সংস্থা লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন করেনি। তাই লাইসেন্স বাতিল।

বিদেশি অনুদান পায়, এমন সংস্থার সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্তও ছিল ২২,৭৬২টি। নতুন বছরের পয়লা দিনে তা-ই কমে হয়ে গিয়েছে ১৬,৮৩৯টি। সূত্রের খবর, বেশ কিছু সংস্থার লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে একদিনের জন্যও লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি এই প্রায় ৬ হাজার সংস্থার। সূত্রের খবর, লাইসেন্স রিনিউ-এর জন্য আবেদন করেছে এমন ১৭৯টি সংস্থার আর্জিও নানাবিধ কারণে খারিজ করেছে অমিত শাহের মন্ত্রণালয়।

এফসিআরএ লাইসেন্স না-থাকার অর্থ, মিশনারিজ অফ চ্যারিটির মতো জামিয়া, অক্সফ্যামও বিদেশি অনুদানের জন্য নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর কোনও অর্থ নিতে পারবে না। একইসঙ্গে সেই অ্যাকাউন্টে জমা থাকা অর্থ খরচও করতে পারবে না। টেরিজার সংস্থার উপর কেন্দ্রের কোপ পড়ার পর-পরই 'সংখ্যালঘুদের নিশানা করা হচ্ছে' বলে কেন্দ্রকে বিঁধেছিলেন বিরোধীদের একাংশ। এবার জামিয়া, অক্সফ্যামের মতো প্রথম সারির এনজিও-র বিদেশি অনুদান আসার পথ বন্ধ হওয়ায় সেই আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

টেরিজার সংস্থার বিরুদ্ধে ঠিক কী রকম 'আপত্তিকর' ফিডব্যাক এসেছিল, তা নিয়ে মুখ খোলেনি কেন্দ্র। তবে গত সপ্তাহেই গুজরাতে মিশনারিজ অব চ্যারিটির একটি শিশু-কিশোরদের হোমের পরিচালকের বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তরণের অভিযোগ এনেছিল উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। অনেকেই মনে করছেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সূত্র: টিওআই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন