পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, আজকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫০টি। আর এখন ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভালোভাবে চলছে না। ডজন বা তার কিছু বেশি হয়তো মানসম্মত শিক্ষা দিচ্ছে। অনেকগুলো সনদও বিক্রি করছে। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে ভেতরগত ও ব্যবস্থাপনাগত বৈপ্লবিক পরিবর্তন প্রয়োজন। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে পরিমাণগত যে বৃদ্ধি হয়েছে গুণগত মান সেই রকমভাবে বাড়েনি। গুণগত মান বাড়াতে সরকারের ভূমিকা আছে। পাশাপাশি শিক্ষকদেরও এ বিষয়েও দায়িত্ব নিতে হবে।
শামসুল আলম বলেন, আজকে দেশে অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। স্বাস্থ্য খাতে সমস্যা সত্ত্বেও অর্জন অনেক আছে। মানবসম্পদকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে। যদিও বরাদ্দে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়া যায়নি। প্রত্যেক নাগরিককে শিক্ষার সুযোগ দেওয়া রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। তারপরও সম্পদের অভাবের কারণে সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ব্যক্তিগত খাতও এর প্রসারে ভূমিকা রাখছে। শিক্ষাক্ষেত্রে একটি ঝাঁকুনি প্রয়োজন।
শিক্ষানীতির আলোকে দীর্ঘ এক দশকেও শিক্ষা আইন না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন সংলাপ অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। তিনি বলেন, সংলাপে যেসব কথা বলা হয়েছে তার প্রায় সবকিছ্ইু জাতীয় শিক্ষানীতিতে আছে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।
সঞ্চালকের বক্তৃতায় গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী করোনাকালে কত শিক্ষার্থী পড়াশোনার বাইরে চলে গেল, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি বিষয়ে একটি বৈজ্ঞানিক জরিপ করার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
শিক্ষাবিদ প্রফেসর সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, উচ্চশিক্ষায় অনেক সমস্যা আছে। গবেষণা অবহেলিত। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে যদি সত্যিকার অর্থে শিক্ষার্থী তৈরি করতে না পারা যায়, তাহলে উচ্চশিক্ষায় যতই চিৎকার, যতই পরিবর্তনের কথা বলা হোক, কাজে আসবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তির পর তিনি দেখেছেন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ভাষা দক্ষতা ভালো না।
প্রফেসর সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাকে মানবাধিকার হিসেবে দেখতে হবে। পাশাপাশি বাজেটের ২৫ শতাংশ বা জিডিপির ৪ থেকে ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করতে হবে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন