ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় এবার প্রায় ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। প্রায় ৪০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। এবারের মেলায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১২ ক্যাটাগরিতে ৪২ অংশগ্রহণকারীকে, বিভিন্ন দফতরের ১০ কর্মকর্তাকে এবং ২৭টি সংস্থাকে পদকে ভূষিত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত ‘২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২২’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, দেশের ব্যবসা বাণিজ্য এবং সার্বিক অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী দিক নির্দেশনা ও সিদ্ধান্তের ফলে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশের বাণিজ্য এবং অর্থনীতি সচল রয়েছে। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, অনেক প্রতিকূল পরিবেশে এবারের বাণিজ্য মেলা শেষ হলো। দেশের রফতানি বাড়ানোর জন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বছর ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামী ২০২৪ সালে দেশের রফতানি ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তখন এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে আমাদের অনেক বাণিজ্য সুবিধা থাকবে না। আমাদের প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে। তখন পিটিএ অথবা এফটিএ স্বাক্ষর করে বাণিজ্য সুবিধা নিতে হবে। চলতি বছর আমরা চারটি দেশের সঙ্গে এসব বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য কাজ করছি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন ছাড়াও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, রাজধানীর কুড়িল থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনকেন্দ্রে বসেছিল বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর। এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল ও ১৫টি খাবারের দোকান ছিল।
এবারের মেলা জমাতে আকর্ষণ বাড়াতে সব পন্যে দেয়া হয়েছিল বিশেষ ছাড়। পাশাপাশি হোম ডেলিভারিতে ফ্রি ঘোষণা করায় সারা পাওয়া গেছে বেশ। তবে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি তিন দফায় বিধি-নিষেধ জারি করে সরকার। সর্বশেষ নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করাসহ দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিধি-নিষেধে বাণিজ্য মেলা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা চালু রাখেন আয়োজকেরা। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মেলা প্রাঙ্গণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ। মাস্ক না পরা ও স্বাস্থ্যবিধি ভাঙায় জরিমানা করা হচ্ছে নিয়মিত।
এসব কারনে দর্শনার্থীরা ছিলেন চাপের মুখে। বিধিনিষেধের প্রভাবে তুলনামূলক দর্শনার্থী ও ক্রেতা হয়নি। এতে বিক্রি হয়নি পন্য। ফলে প্রতি ব্যবসায়ী হতাশার কথা জানিয়েছেন। এ সময় মেলায় বিক্রিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভূমিকা রাখায় বিশেষ কিছু কোম্পানির স্টলকে পুরস্কৃত করা হয়। আবুল খায়ের কোম্পানিকে প্রিমিয়াম স্টল এ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান করায় পুরস্কৃত করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন