শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ভাষা শহীদ ভাষা সৈনিক লও সালাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির ১৭তম দিন আজ। ১৯৫২ সালের এই সময়ে দিন যতই গড়িয়েছে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে রাজপথ। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র জনতা। ২১ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি সফল করার জোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা। ছাত্রদের আন্দোলনের প্রস্তুতি দেখেই মূলত পূর্ববঙ্গ সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে একমাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।

ঢাকা শহরে সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়। সরকারি এ নির্দেশে বলা হয়, ‘ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করিয়া একমাসের জন্য ঢাকা শহরে সভা, শোভাযাত্রা প্রভৃতি নিষিদ্ধ করিয়াছেন। তবে ভাষার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র জনতা সরকারের এই ১৪৪ ধারাকে মেনে নেয়নি। তারা এটি ভাঙার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙেই বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে মিছিল বের করা হয়। তবে ভাষার প্রশ্নে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। এর চূড়ান্ত রূপ লাভ করে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে ১৯৫০ সালে আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ওই বছরের ১১ মার্চ কমিউনিস্ট ভাবধারার ছাত্র নেতা আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। এপ্রিলে পার্লামেন্টে আরবি হরফে বাংলা লেখার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। তবে নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি অব অ্যাকশন ফর ডেমোক্রেটিক ফেডারেশন ঢাকায় আয়োজন করে ‘গ্রান্ড ন্যাশনাল কনভেনশন’। সেখান থেকে বাঙালিদের মূূল দাবিগুলোর মধ্যে উর্দূর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব গৃহীত হয়।

১৯৫০ সালের ৭ ডিসেম্বর মোহাম্মদ আকরম খাঁ’র নেতৃত্বে গঠিত হয় ১৬ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ব বাংলা ভাষা পরিষদ আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাবকে বাস্তবতা বিবর্জিত এবং উদ্ভট হিসেবে আখ্যায়িত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করে। এ কমিটি তাদের রিপোর্টে পূর্ব পাকিস্তানের অফিস-আদালত ও শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বতোভাবে বাংলাকে ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করে। যা পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী গণপরিষদে বিরোধিতা করে তা বাতিল করে দেয়। এটি ছিল মূলত পূর্ব-বাংলার জনগণকে শিক্ষাক্ষেত্রে পঙ্গু করার জন্য একটি দূরভিসন্ধি। তবে এই দূরভিসন্ধি বাঙালি জনতা বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। তারা আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে এই দাবি আদায় করে এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী। এসব ইতিহাসই নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য প্রতিবছর এই ফেব্রুয়ারিতে হয়ে থাকে নানা আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন