শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ভাষা শহীদ ভাষা সৈনিক লও সালাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বাঙালির বিস্ময়কর আত্মজাগরণের মাস ফেব্রæয়ারি। ভাষা আন্দোলনের চেতনা আজও বাঙালি জাতির জীবনে প্রবহমান। ভাষা আন্দোলনের চ‚ড়ান্ত পরিণতি লাভ করে বায়ান্নর একুশে ফেব্রæয়ারি। যেদিন পাকিস্তানি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় দেশের দামাল ছেলেরা। তবে এই আন্দোলন হঠাৎ করে বা অল্প কয়েকদিনেই এই চ‚ড়ান্ত অবস্থায় রূপ লাভ করেনি। বরং দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টা আর তৎপরতার মাধ্যমেই এসেছে বায়ান্নর একুশ।

১৯৫২ সালে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সব ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত হচ্ছিল ছাত্রজনতা। যত দিন যাচ্ছিল ততই গতি পাচ্ছিল ভাষার আন্দোলন। প্রকাশ্যে ও গোপনে চলছিল মিটিং মিছিল সভা-সমাবেশ। সর্বত্রই উচ্চারিত হচ্ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় ১১ ও ১৩ ফেব্রæয়ারি পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী চলে কর্মসূচি সফল করার প্রস্তুতি এর পর ১৯৫২ সালের আজকের দিনে পালিত হয় পতাকা দিবস। এদিন পুরুষের পাশাপাশি নারী কর্মীরা পতাকা বিক্রি করে ভাষা আন্দোলনের জন্য তহবিল গঠনের কাজ করেন। একই সঙ্গে ২১ ফেব্রæয়ারির কর্মসূচি সফল করার জন্য গণসংযোগের কাজ করেন। এভাবে পরিণতির দিকে এগোতে থাকে বাঙালির ভাষা আন্দোলন। এভাবে ধীরে ধীরে ভাষার প্রশ্নে সফলতা। এই ভাষা আন্দোলন কিংবা ভাষা হিসেবে বাংলার প্রথম দাবি আসে ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। যখন তমদ্দুন মজলিস ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা-উর্দু’? নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে, যেখানে সর্বপ্রথম বাংলাকে পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি করা হয়। তমদ্দুন মজলিসের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর আবুল কাসেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হওয়া উচিত সে ব্যাপারে একটি সভা আহŸান করেন। সেই সভায় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে পাকিস্তান সরকারের কাছে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

একই বছরের নভেম্বরে পাকিস্তানের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমানের উদ্যোগে পশ্চিম পাকিস্তানে আয়োজিত ‘পাকিস্তান এডুকেশনাল কনফারেন্সে’ পূর্ব-পাকিস্তান হতে আগত প্রতিনিধিরা উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন এবং বাংলাকেও সম-অধিকার প্রদানের দাবি জানান। কিন্তু তার পরেও পাকিস্তানিরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি। ফলে বাঙালি বীর সন্তানরা বেছে নেয় আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে শুরু হয়ে সে আন্দোলন চলতে থাকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত। ’৫২র একুশে ফেব্রæয়ারিতে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঠেলে দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। আর সেই থেকে ফেব্রæয়ারিকে ভাষার মাস হিসেবে পালন করে আসছে। ভাষার মাস উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে চলছে মাসব্যাপি অমর একুশে বইমেলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন