অগ্নিঝরা মার্চের ১২তম দিন। ১৯৭১ সালের এই সময়টিতে বাঙ্গালী জাতি পার করছিল এক উত্তাল। এক একটি মুহূর্ত যেন নতুন ইতিহাসে রূপ নিচ্ছে। সারা দেশ ছিল আন্দোলন সংগ্রামমুখর। বাংলার দামাল ছেলেরে যেন রাস্তায় নেমে এসেছিল এই সঙ্কল্প নিয়ে যা দাবী আদায় না করে আর ঘরে ফেরা যাবে না। প্রতিদিনই ছোট বড় অসংখ্য মিছিল বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে যায়।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বত্র চলছিল অসহযোগ। জনগন সরকারকে খাজনা ও ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থ ও পণ্য চালান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এইদিন বেশকিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন চলমান স্বাধীনতার আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করেন। এদিন চলচ্চিত্র শিল্পীদের একটি সভা শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন নায়করাজ রাজ্জাক, মোস্তফা এবং কবরী।
এরপর তারা একটি মিছিল বের করে যা টেলিভিশন অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। জনগন এদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে। এদিন পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়নের সভাপতি আলী আশরাফ ও সম্পাদক কামাল লোহানী সদস্য আ ন ম গোলাম মোস্তফা তেজোদীপ্ত ভাষায় বক্তব্য দেন এবং বলেন দেশব্যাপি চলমান স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে সাংবাদিক সমাজ বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না । তারা সর্বশক্তি দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেওয়ার অংশগ্রহণ করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন এবং শেষে একটি শোভাযাত্রা বের করেন যা বায়তুল মোকাররমে গিয়ে শেষ হয় ।
এদিন প্রায় অর্ধশত চারু ও কারু শিল্পীর উপস্থিতিতে পটুয়া শিল্পী কামরুল হাসানের আহ্বানে একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। আয়োজিত সভায় মুর্তজা বশির ও কাইয়ুম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এ সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। এ সভায় শাপলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন