স্বাধীন পারভেজ
অদ্ভুত ধরনের এক সহযাত্রী জুটেছে আমার সাথে। সারাটা পথে বাসে বা বাসের আশপাশে এবং লঞ্চঘাটে যতজন ভিক্ষুক তার সামনে পড়েছে প্রত্যেককেই দু’চার টাকা করে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এমনকি ডেকে এনে বা যেচে গিয়েও টাকা দিয়ে আসছেন অনেককে। ভদ্রলোকের যা বয়স তাতে তো তাকে মোটেও ছাত্র বলে মনে হয় না। তাই পরীক্ষায় পাস করা বা সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য দোয়া-খয়রাতের সম্ভাবনাটা ছেড়ে দিতে হয়। আবার এর যে চেহারা, বেশভূষা আর দানের যা পরিমাণ তাতে তাকে খেয়ালি নব্যধনীও বলা সাজে না। প্রেমে ব্যর্থ হওয়া বা পুরনো প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ায় যদি মাথা বিগড়ে গিয়ে থাকতো তাহলে তো পোশাক-আশাক এতো পরিপাটি থাকার কথা নয়, বিড়ি-টিড়িও খেতেন নিশ্চয়ই। সুতরাং এই সম্ভাবনাটাও ধোপে টিকছে না। তাহলে এ আদম সন্তানের হয়েছেটা কি? তাকে নিয়ে নানান চিন্তা আমার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে।
ঠিক তখনই আমাদের গাড়িটি মাগুরা শহর পার হয় আর সঙ্গে এক ছোকরা সহযোগী নিয়ে এক অন্ধ সুরেলা ভিক্ষুকও বাসে উঠে আসে। আমার সহযাত্রী সেই অন্ধকে টাকা দান করার পর সাথের ছেলেটাকেও একটা পাঁচ টাকার নোট ধরিয়ে দিলেন। ছেলেটা অর্থদাতার ভুল ধরতে পেরে তার ময়লা দাঁত বের করে ফিক করে হেসে ফেললো। এই উজবুকটা তবুও কিছু বুঝলো না। তারা যে একই ডালে দুইটি ফুল, টু ইন ওয়ান সেটা হয়তো এর মাথায়ই ঢোকেনি। কিন্তু একে নিয়ে আমার মাথায় যে অস্বস্তি ঢুকেছে তার একটা সত্বর সমাধান হওয়া দরকার। অগত্যা আমি ভদ্রলোককে প্রশ্ন করে বসি, কি এমন ব্যাপার ঘটেছে যে তার আজ টাকা বিলোনোর ধুম পড়েছে?
আমার প্রশ্নে বেচারার মুখজুড়ে আঁধার নেমে এলো। একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উদাস দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে বলতে লাগলেন- সে এক লম্বা কাহিনীরে ভাই! আজ থেকে প্রায় এগারো বছর আগের ঘটনা। জীবনের প্রথম ঢাকা শহরে গিয়েছিলাম, কাজের সন্ধানে। কিন্তু কাজ পাবো কোথায়? যার ভরসায় গিয়েছিলাম সেই গ্রামের দুলাভাই চারদিনের মাথায় আমাকে তার মেস থেকে বের করে দিয়ে বললেন বাড়ি ফিরে যেতে। কিন্তু আমার পকেটে দশটা টাকাও ছিল না, বাড়ি যাবো কিভাবে? আর বাড়ি গিয়েও বা কি করবো?। মেসের বাইরে রাস্তায় বসে কাঁদছিলাম। শেষে সন্ধ্যার পরে ভাবলাম মেসেই ফিরে যাই। রাগ কমলে দুলাভাই নিশ্চয়ই একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিবেন। কিন্তু ভাগ্য খারাপ। সেই দুলাভাই এবার জানালেন মেসে নাকি কার টাকা হারানো গিয়েছে আর সবার সন্দেহ আমার উপর! বুঝলাম সে যে কোন মূল্যে আমাকে মেস থেকে তাড়াতে চাইছেন। আশাহত হলাম। কোনরকমে রাতটা পার করে সকালেই মেস থেকে বেরিয়ে পড়লাম শূন্য হাতে। হেঁটে হেঁটেই ফার্মগেট থেকে গাবতলীর দিকে রওনা করেছিলাম। তখন এতোটুকু বিষয়ও মাথায় ছিল না যে গাবতলী থেকে কলারোয়ার বাসে উঠতেও টাকা লাগবো। আমি শুধু পালাচ্ছিলাম। টাকা না দেখেও চুরির দায়ে শাস্তি পাওয়ার ভয়ে পালাচ্ছিলাম! আর বাড়ি গিয়ে কি করবো, কিভাবে সংসার চালাবো তাই ভেবে চোখে আঁধার দেখছিলাম! মৃত্যুকে মনে মনে বিলাপ করে কাছে ডাকছিলাম আবার রাস্তায় গাড়ি ছুটে আসতে দেখলেই দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য তাড়াতাড়ি ফুটপাতে উঠে এসে দোয়া দুরুদ পড়ে বুকে ফুঁ দিচ্ছিলাম! এ এক আজব খাঁচা রে ভাই, বুঝলেন? পরানের চেয়ে প্রিয় জিনিস আসলে দুনিয়ায় কিছুই নাই হা হা হা ...!
লোকটা নিজের বুকের হাড়ের সারিতে মৃদু আঘাত করে হাসতে থাকেন। যতদুর জানি পরান বা হার্ট বুকের বাম পাশেই থাকে। এই ব্যাটা তার ডান বুকেই আঙ্গুল চাপড়াচ্ছিলেন। সেদিকে বেশি খেয়াল দিয়ে সময় নষ্ট করলাম না। আমার মন তখন হাঁটছিল শ্যামলী শিশুমেলার সামনের ফুটপাথ দিয়ে। হ্যাঁ, যতক্ষণ ধরে লোকটা হাঁটা শুরু করেছে তাতে তার পঙ্গু হাসপাতাল-শিশুমেলা পর্যন্তই পৌঁছানোর কথা। রাতে তার খাবার জুটেছিল কিনা কে জানে? যদি সে অভুক্তও থেকে থাকে তবুও অন্তত পক্ষে সংসদ ভবন তো পার হবেই! আসাদ গেটের সামনে পৌঁছানোও অসম্ভব কিছু নয়।
তারপর পরানখানা হাতে নিয়ে ক্ষুধা পেটে একসময় শেরেবাংলা নগরে গিয়ে উঠলাম। বুঝতেও পারিনি ভুল পথে এসে পড়েছি। রাস্তার ধারের এক মোটর গ্যারেজে গিয়ে জিগ্যেস করলাম- ভাই, গাবতলী কতোদুর? সে লোক জানালো আমি ভুল পথে আসছি। সর্বনাশ! পিপাসায় বুক ফেটে যাচ্ছিলো, পানি খেতে চাইলাম। কিন্তু পানি গেলার পরই হরহর করে বমি বেরিয়ে এলো। লোকজন জমা হয়ে গেলো। ঐ দোকানের সব কর্মচারী বেরিয়ে এলো। সৌভাগ্যক্রমে তাদের মধ্যে একজন ছিল আমার পাশের গ্রামের বাসিন্দা, এমনকি আমরা একই সাথে প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম। সবকিছু শুনে দোকান মালিক আমাকে আশ্রয় দিলেন। ওই দোকানেই কাজ পেয়ে গেলাম। তবে বেতন ছাড়া, পেটেভাতে। বাড়িতে চিঠি পাঠালাম দোকানের ঠিকানা দিয়ে। পরের মাসে মায়ের চিঠি পেলাম, আব্বার অম্বলের চিকিৎসা করানোর দরকার। ছোট বোন লিখেছে, ভাইজান এইবার তুমি আমারে জর্জেটের থ্রিপিস কিনে দিবা। চিঠি পড়ে তো আমার দু’চোখ ভিজে যায়। এর পরই ঘটলো সেই ঘটনাটা!
সর্বনাশ! এই লোক এতোক্ষণ যে একা একা ভূতের মতো বকবক করে যাচ্ছে এসব তাহলে সেই মূল ঘটনা নয়?। মূল ঘটনা তাহলে এখনো শুরুই হয়নি?। তবে আমি চুপচাপ তার কথা শুনতে থাকি। আগ্রহ নিয়েই শুনি। লোকটা চোখ মোছে। এই কান্না কি তার মা-বোনের চিঠির জন্য নাকি পরবর্তী ঘটনার জন্য তা বুঝে উঠতে পারি না। আমি অপেক্ষা করতে থাকি, লোকটা আবার বলতে শুরু করে- একদিন ভর দুপুর বেলা। দোকান ফাঁকা, সবাই আমাকে বসিয়ে রেখে খেতে গেছে। রাস্তায়ও খুব একটা লোকজন নেই। শুধু মাঝেমধ্যে হুইসেল বাজিয়ে লোকাল বাসগুলো ধূলো উড়িয়ে শহরের নানা প্রান্তে ছুটে যাচ্ছে। ঠিক এমন সময় কোত্থেকে এক থুত্থুড়ে বুড়ি এসে আমার দোকানের সামনে দাঁড়ালো। আর তারপর সাথে সাথেই, আপনি বিশ্বাস করবেন না ভাইজান, কোথা থেকে এক নায়কের মতো চেহারাওয়ালা জোয়ান ছেলে এসেই বুড়ির ঘারের উপর পড়লো! আসলে লোকটা খুব তাড়াহুড়া করে যাচ্ছিলো, আর বুড়িও ভিক্ষার আশায় হাত বাড়িয়েছিল। বাধা পেয়ে ছেলেটা তাল সামলাতে পারেনি, পড়ে গেছে। কিন্তু বুড়িটা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছেলেটা হঠাৎ ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদতে শুরু করে দিল। বুড়িকে টেনে তুলে মাথায় পিঠে হাত বুলিয়ে দিলো আর কান্না জড়ানো কণ্ঠে অনুশোচনা আর সমবেদনা প্রকাশ করতে লাগলো। বুড়ি এবং আমি দুজনেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলাম। একটু পর নিজেকে সামলে নিয়ে ছেলেটা জানালো যে কয়েকদিন আগেই তার দাদি মারা গেছে। তাই ছেলেটার মন এমনিতেই খারাপ ছিল, তার উপর নিজের জন্য একজন বৃদ্ধা লোক এভাবে কষ্ট পেয়েছে তাই দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেনি। এরপর ছেলেটা একটা অভাবনীয় কা- করে বসলো। আচমকা মানিব্যাগ থেকে দুইটা পাঁচশ’ টাকার নোট বের করে বুড়ির হাতে দিল। সেই টাকার ধকল সইতে না পেরে বুড়ির তো অজ্ঞান হবার জোগার! অবিশ্বাস কইরেন না ভাইজান, এগারো বছর আগের ঘটনা। তখনকার এক হাজার টাকার মূল্য আজকের দশহাজারের চেয়েও বেশি। যাই হোক, ছেলেটা বললো যেহেতু বুড়ির কাছে এতোগুলো টাকা রাখা নিরাপদ নয়, উল্টা এই টাকার জন্য বস্তির নেশাখোরদের হাতে তার প্রাণও যেতে পারে তাই সে টাকাটা আমার হেফাজতে রাখলো। আর বুড়িকে বললো প্রয়োজন মতো কিছু কিছু করে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে খরচ করতে। ভাই, আপনি বিশ্বাস করবেন না, বুড়ির মুখটা তখন যে কি ফাইন লাগছিল! হাসলে যে মানুষরে এতো সুন্দর লাগে তা আমি আগে জানতাম না। যেন চেহারাটাই পাল্টে গেল তার। পূর্ণিমার চান্দের মতন ঝলমল করছিল বুড়ির মুখটা। ছেলেটা তারে আরেক দফা সান্ত¦না দিয়ে আবার দ্রুত পা চালিয়ে উধাও হয়ে গেল। বুড়িও হাঁটতে হাঁটতে একদিকে চলে গেল। আসলে সে হেঁটে হেঁটে ভিক্ষা করতো। ভাবলাম টাকাটা ভাংতি করে রাখবো যাতে বুড়ির নিতে সুবিধা হয়। আমি জানি এখন আমার এই কথা কেউই বিশ্বাস করবে না। কিন্তু আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানে যে আমার মনে কোন কুবুদ্ধি ছিল না। কিন্তু পরের দিন, আল্লার কি লীলাখেলা! ঠিক পরের দিনই খবর আসলো আব্বারে মুমূর্ষু অবস্থায় খুলনা নিয়ে গেছে। যেভাবেই হোক আমি যেন টাকা পাঠিয়ে দেই। কিন্তু আমি টাকা পাবো কোথায়? খালি আফসোস করি আর কান্দি। মাঝেমধ্যে ভাবি সেইদিন ওই বড়লোকের ছেলের সাথে আমার ধাক্কা লাগলোনা ক্যান? এরই মাঝে একদিন আমাদের এলাকার ছেলে, এক বাসের হেল্পার দোকানে এসে জানালো আব্বার অবস্থা নাকি মরণাপন্ন। আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। তার হাতেই টাকাটা পাঠিয়ে দিলাম। হ্যাঁ ভাইজান, ওই বুড়ির টাকা। যে টাকা পেয়ে বুড়ির রোদ্রে পোড়া, চোয়াল ভাঙ্গা, দাঁতহীন কালো কুচকুচে মুখে পূর্ণিমার হাসি ফুটে উঠেছিল।
এইবার ভদ্রলোক হাহা করে সশব্দে কেঁদে ওঠেন। তার কাহিনী শুনতে শুনতে যদিও আমার মনটাও আর্দ্র হয়ে উঠেছিল তবু হঠাৎ এই আচমকা কান্নায় আমি বিব্রত হয়ে গেলাম। চমকে উঠে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম। বাঙালি যেমন আবেগপ্রবণ এবং সংবেদনশীল জাতি, তাতে এর কান্না দেখে ভুল বুঝে আমাকে আবার প্যাঁদানি না দেয়! লোকটা পর মুহূর্তেই নিজেকে সামলে নিলেন। পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ মুছে, কেশে নাক ঝেড়ে অবশেষে ধাতস্থ হলেন। ফের বলতে লাগলেন- তারপর আমি একটা চাপা ভয় আর অপরাধবোধ নিয়ে কাজ করতে লাগলাম। সারাক্ষণই রাস্তাভর্তি গিজগিজ করা লোকের মাঝে বুড়ির মুখটা খুঁজতাম অথচ মনেপ্রাণে চাইতাম এই জীবনে যেন সে আর আমার সামনে না পড়ে। আল্লাহর কাছে জোড়হাত করে দোয়া করতাম আল্লাহ তুমি বুড়িরে ভালো রাইখো। তোমার অফুরন্ত ভা-ার থেকে তারে সাহায্য করো, কিন্তু কোনদিন আমার সামনে আইনো না। আমার এই দোয়া কবুল হয় নাই। একদিন ভর দুপুর বেলা আচমকা বুড়ি এসে হাজির। সেদিনও দোকানে লোক ছিল না। আমাকে দোকান পাহাড়ায় রেখে সবাই খেতে গেছে। বুড়িকে দেখেই আমার বুক শুকিয়ে গেল। কোন কথাই বলতে পারছিলাম না। অস্পষ্ট কাতর কণ্ঠে বুড়ি বারবার টাকা চাইছিল আর আমি হাঁ করে অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে ছিলাম। দোকানের লোকজন ফিরে এসে বুড়িকে এখানে এভাবে দেখলে আমার বিপদ হতে পারে ভাবতেই জবানে শক্তি ফিরে এলো। আচমকা আমার ভেতর থেকে কোন শয়তান যেন বুড়িকে ধমক দিয়ে উঠলো। টাকার কথা অস্বীকার করে বসলো। কিন্তু কি তাজ্জব ব্যাপার! বুড়ি একটুও তর্ক করলো না। খালি সেই রক্তশূন্য মুখটায় কালো আঁধার নেমে আসলো। বুড়ি কেমন প্রাণহীন চোখে ফ্যালফ্যাল করে এক ধ্যানে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। সেই চোখের ভাষায় কতো যে কথা ছিল ভাইজান, আজও সেই মুখের ছবিটা মনে পড়লে আমি শিউড়ে উঠি। আমার পিলে চমকে যায়। আমি সহ্য করতে পারি না। এভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতে না ভাইজান, একসময় বুড়িটা দুই চোক্ষের পানি ছেড়ে দিল।
এইবার আর লোকটা গলা ছেড়ে কাঁদলো না, দাঁতে ঠোঁট চেপে গোঙ্গাতে থাকলো। তবে সে একা নয়, এবার আমার চোখেও অশ্রু ঝরছিল। কিঞ্চিত ফোঁপাচ্ছিলামও বটে। ভাগ্যিস সন্ধ্যা নেমে গেছে। বাসের ভেতর আলো আঁধারের খেলা, তাই কেউ আমাদের এই ব্যাপারটা খেয়াল করেনি। দুজনই যে যার মতো করে নিজেদের সামলে নিলাম। কিছুক্ষণ দম নিয়ে লোকটা আবার তার কাহিনী শুরু করলেন- এরপর কতো যে সেই বুড়িকে খুঁজেছি। আশপাশের দশটা বস্তি চষে ফেলেছি। একেক জায়গায় দুই তিন বার করেও গেছি। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ পাইনি। শেষ দেখার সেউ অভিশপ্ত দিনে সে আমাকে বলেছিল- ‘বাজান, টেহা দে ওশুত খামু। শরীলে অনেক ব্যাদনা’।
জানেন? দুনিয়াতে এই একটা বাক্যই আমাকে সবচেয়ে বেশি শাস্তি দেয়। এই একটা কথাকে আমার কাছে পাহাড়ের মতো ওজনদার মনে হয়। যে পাহাড়টা বুকে চাপিয়ে প্রতিটা মুহূর্ত বেঁচে থাকতে হয় আমাকে। আজ আমার ভালো ব্যবসা আছে। অল্পকিছু টাকাও আল্লাহ আমাকে দিছে। মুন্সিবাজারে আমার চার চারটা দোকান ঘর। কিন্তু আমি ঋণী। আমার মনের ভেতর সারাক্ষণ একটা ঋণের বোঝা ভর করে থাকে। তাই রাস্তাঘাটে যেখানেই ভিক্ষুক দেখি, ডেকে ডেকে সেই ঋণ শোধ করি। আল্লাহ গো! কবে তুমি আমারে ঋণমুক্ত করবা...?
লোকটা একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। আমিও সন্ধ্যার আলো-আঁধারিতে দৃষ্টি বিছিয়ে দেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন