ঘরে বসেই আমেরিকান অফিসে চাকরি, বাংলাদেশে বসেই তরিকুল ইসলাম তুষারের আমেরিকান একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) স্পেসালিস্ট হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়া তিনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ফাইবার ও আপওয়ার্কে টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সার হিসাবে যুক্ত রয়েছেন তিনি এবং ২০২১ সালে তিনি আপওয়ার্কে (Best SEO Expert in Bangladesh) এ ফ্রিল্যান্সার হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এখন নিজের ফ্রিল্যান্সিং পাশাপাশি তুষার তার নিজের গ্রামের তরুণদের আবারও ফ্রিল্যান্সিং শেখাতে শুরু করেছেন। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নিজের নামে গড়ে তুলেছেন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (লার্ন ফ্রিল্যান্সিং উইথ তুষার)। এছাড়াও অনলাইনে ‘Toriqul Islam Tusher’ নামে ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ‘Learn Freelancing with Tusher’ নামক ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে তার। সেখানে লাইভ ক্লাস নেয়ার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। এখান থেকে এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন), সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ আউটসোর্সিংয়ে বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তার এলাকায় ৫০ জন এবং অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে ৩০০ এর বেশী বেকার যুবক-যুবতীদের ফ্রিল্যান্সার হিসাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের ছেলে-মেয়েরা অনেক মেধাবী ও স্মার্ট। তারা সহজেই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবে। তরুণ প্রজন্মের নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে জহির বলেন, ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়া অবারিত। এখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নতুনদের অবশ্য দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। অনেক বিষয়ে দক্ষতা অর্জন না করে শুরুতে একটি বিশেষ দক্ষতা অর্জন জরুরি। নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং এ যুক্ত হতে চায়, তাদের প্রধান লক্ষ্য থাকে অর্থ উপার্জন, এই জন্য তার ভালো কিছু করতে পারে না! দক্ষতা অর্জন করা শুরু করলে টাকার দিকে দেখতে হবে না।
তরুণদের জন্য বড় সমস্যা ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট। অনেকেই সেটি ঠিকমতো করতে পারেন না। ফলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পান না। এই সংকট কাটাতে অবশ্যই ইংরেজিতে যোগাযোগে পারদর্শী হতে হবে। তা ছাড়া ধর্য ধরে লেগে থাকলে সাফল্য আসবে ঠিকই। তুষার জানান, ছাত্র অবস্থায় যদি কেউ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়, এটি হবে তার জন্য বাড়তি আয়ের পথ। করোনা-পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সিং বেকার যুবকদের আশার আলো দেখাতে পারে।
তরিকুল ইসলাম তুষারের মনে করেন, আপনি যদি ডিগ্রি প্রাপ্ত হোন তবে আপনার জন্য ওয়েলকাম, বর্তমানে আগের মত আর সুযোগ নেই যে ১০ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে পরে ১০ বিলিয়নের মালিক হবেন। বর্তমানে অবস্থা হচ্ছে সঠিক পথে না যেতে পারলে ১০ টাকা দিয়ে ব্যবসা করে ১০ বিলিয়নের মালিক হওয়া যাবে না। যাদের শিক্ষাগত যোগত্য নেই তাদের জন্য এই পেশা অসম্ভব, যদি স্বয়ং আল্লাহ আপনাকে কোন বিশেষ জ্ঞান না দিয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য এই পেশা উপযোগী নয়।
এই পেশায় আসতে হলে আমর কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন? সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমত আপনাকে স্কুল/কলেজের/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা অর্জন করতে হবে। হতে পারে তা হাতে কলমে শিক্ষা কিংবা বই মুখস্ত করে শিক্ষা, তবে আপনাকে শিক্ষা গ্রহন করতেই হবে। দ্বিতীয়ত, “ফ্রিল্যান্সিং কোন রাতারাতি বড়লোক হবার সর্টকার্ট রাস্তা নয়! সাফল্য এবং উন্নয়নের কোন রহস্য নেই কারণ আমি বিশ্বাস করি যে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বড় হতে পারে। যখন লোকেরা আমাকে বিলাসিতায় থাকতে দেখে, তারা ধরে নেয় যে আমার কাছে এটি সহজ, কিন্তু সত্য হল যে আমি দিনের বেলা কঠোর পরিশ্রম করি। আমি কঠোর অধ্যয়ন এবং একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা মানে যখন অধিকাংশ মানুষ তাদের অবস্থা এবং আরাম বজায় রাখে।"
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন