তুরস্কের ইইউতে যোগদানের বিষয়ে আলোচনা স্থগিত করা হবে কিনা তা নিয়ে এ সপ্তাহে ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। অন্যদিকে তুর্কী সরকার অন্যত্র মুখ ফেরাবার অপেক্ষায় রয়েছে এবং এ বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, ইইউয়ের বিষয়ে তুরস্কের নিরুদ্বিগ্ন হওয়া উচিত এবং তুরস্ক কেবল এ সংস্থায় যোগদানের দিকে তাকিয়ে নেই। উপরন্তু তিনি ইউরেশিয়া নিরাপত্তা গ্রুপ সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনে (এসসিও) রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যোগ দেয়ার জন্য তার অভিপ্রায়ও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, তুরস্ক কেন সাংহাইয়ে থাকবে না! ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের জন্য তুরস্কের দীর্ঘ চেষ্টায় কখনও শর্তমুক্ত হতে দেখা যায়নি। সে পথ বার বার জটিল হয়েই দেখা দিয়েছে। দেশটি ইইউয়ের সদস্য হওয়ার জন্য আকাক্সক্ষা পোষণ করে এসেছে ১৯৬০-এর দশক থেকে। এবং আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানায়, ১৯৮৭ সালে। কিন্তু সত্যিকারভাবে ২০০৫ সালের আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর কোন আলোচনা শুরু হয়নি। আলোচনা সম্পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় তথাকথিত ৩৫ অধ্যায়ের মধ্যে একটি বন্ধ হয়ে গেছে এবং তাই ইইউয়ের সদস্য পদ অর্জনে সেটিই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ইইউ পার্লামেন্টে তুরস্ক ইস্যু নিয়ে আলোচনা শুরু হয় গত মঙ্গলবার এবং এ সপ্তাহান্তে এ ব্যাপারে ভোটাভুটির কথা। পার্লামেন্টে তুরস্ক বিষয়ক রিপোর্টার কাতি পিরি বলেছেন, তার অনুমান, পার্লামেন্টের উদ্যোগে প্রবেশ আলোচনা অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানানো হবে। তিনি বিবিসিকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইইউ সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার মতো যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতা আছে বলে আমরা মনে করি না। তুরস্কে ১৫ জুলাই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে বিশেষ করে শুদ্ধি অভিযানের পর সরকারের গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধিকার রেকর্ড নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে সমালোচনা এসেছে ব্রাসেলস বৈঠকে। অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের জড়িত থাকার অবিযোগে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি লোককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ১০ পার্লামেন্টে সদস্যসহ প্রায় ৩৬ হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক ডজন সাংবাদিককে। কয়েকটি সংবাদ মিডিয়াও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাতি পিরি আরও বলেন, ইইউয়ের প্রবেশ প্রক্রিয়াই এখন ঝুঁকির সম্মখীন। আমরা এ কথা বলছি না যে, তুরস্কের জন্য দরজা বন্ধ করে দেয়া উচিত আমাদের। কিন্তু আমরা বিষয়টির ব্যাপারে এ প্রক্রিয়াই ব্যক্ত করছি যে, তুর্কী সরকার এর কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে ইইউয়ের দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা প্রবেশ আলোচনা শুরু করার আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে তুরস্কের। বিবিসি, রয়টার্স, ডিপিএ ও ডিডব্লিউ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন