বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের উদ্দেশে বলেছেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে যত দ্রুত সম্ভব এর সঠিক চিকিৎসা শুরু করুন। ডেনমার্কের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্ক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। নভো নরডিস্ক ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ও নিয়ন্ত্রণে গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে। জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নভো নরডিস্ক এবং ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে সম্প্রতি যোগদান করেছেন।
জাতীয় দলের এ অধিনায়ক প্রাথমিকভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, দ্রুত রোগ নির্ণয়, ভালো চিকিৎসা এবং সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের ওপর সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের উপকারিতার ব্যাপারেও সচেতনতা সৃষ্টিতে তিনি বিশেষ জোর দেবেন।
মাশরাফি বলেন, ডায়াবেটিস নিয়ে যদি কেউ ভালোভাবে বাঁচতে চান, তবে তার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হবে দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করা। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদের জটিলতা এড়ানো যাবে। তাই আগেভাগে শুরু করুন, ডায়াবেটিসকে বদলে দিন। মাশরাফি বলেন, ডায়বেটিস সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে বাঁচতে হলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই ৬, ৭ এবং ৮ এ সংখ্যাগুলোর ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। ৬, ৭ এবং ৮-এর ব্যাখ্যা করে মাশরাফি বলেন, সুস্থভাবে বাঁচার জন্য ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির সকালের নাশতার আগে রক্তে শর্করার মাত্রা ৬-এর নিচে রাখতে হবে, এইচবিএওয়ানসি (রক্তে তিন মাসের শর্করার গড়) থাকবে ৭ বা এর নিচে এবং সকালে নশতার দুই ঘণ্টা পর রক্তে শর্করার মাত্রা ৮-এর নিচে।
নভো নরডিস্কের কর্পোরেট ভাইস প্রেসিডেন্ট (বিজনেস এরিয়া সাউথ ইস্ট এশিয়া) পিটার বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ডায়াবেটিসের বৈশ্বিক চাপ মোকাবেলায় শুধু রোগ নির্ণয় করাটাই যথেষ্ট নয়। চিকিৎসাসেবা নেয়াটা জরুরি। তিনি বলেন, যাদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তাদের মাত্র ৫০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে। আবার এ সেবা গ্রহণকারীদের অর্ধেকেরও কম ব্যক্তি চিকিৎসার সঠিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে। পিটার বলেন, তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেন রোগটি নিয়েই ভালোভাবে বাঁচতে পারে সে লক্ষ্যে তাদের সঠিক সেবা এবং সহায়তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
নভো নরডিস্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ রাজন কুমার বলেন, ডায়াবেটিস আক্রান্তরা যেন জটিলতা ছাড়া জীবনযাপন করতে পারে তা নিশ্চিত করাই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। ‘এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় যে, অতি বিপজ্জনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডায়াবেটিস। বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭১ লাখ অথচ তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের কোনো ধারণাই নেই যে, তারা ইতোমধ্যেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছর দেশে ১ লাখ ২৯ হাজার ৩১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে ডায়াবেটিসজনিত কারণে। ‘অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস মানুষের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা ধীরে ধীরে দেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো যেমনÑ হার্ট, কিডনি, চোখ এবং পা এগুলোর ক্ষতি করতে থাকে।
নভো নরডিস্কের হেড অব মার্কেটিং ডা: মোহাম্মদ সাইফুল বলেন, আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ডায়াবেটিস এবং এর লক্ষণসমূহ সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরি করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখা এবং আরো বেশি মানুষ যাতে ডায়াবেটিসের জটিলতামুক্ত একটি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে তা নিশ্চিত করা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন