যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর হোয়াইট হাউসে কর্মরত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারেন, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শীর্ষ এক ব্রিটিশ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. প্যাট্রিক হেক। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের এ ধরনের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকির কারণ হিসেবে রাতে ৭০ বছর বয়স্ক ট্রাম্পের না ঘুমানোকে দায়ী করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি দিনে কঠোর কর্মসূচি বা অতিরিক্ত কাজের চাপকে আরেক ঝুঁকি হিসেবে অভিহিত করেছেন ড. প্যাট্রিক। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প জানান, রাতে তিনি ৩ ঘন্টার বেশি ঘুমান না।
ড.প্যাট্রিক বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার বিশাল দায়িত্ব ও কর্মকা-ের পর ট্রাম্পের স্বাস্থ্য এমনিতে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এতদিন যে বিশ্রাম পাওয়ার কথা ছিল তা তিনি পাননি। এখন এই বিশ্রামহীন অবস্থায় তিনি ফের প্রেসিডেন্টের মত গুরুদায়িত্ব পালন শুরু করলে তার ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি হবে এবং তার শরীর এ ধকল সহ্য করতে না পারলে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
আরেকজন চিকিৎসক মনে করেন, ট্রাম্প রাতে শোবার ঘরে তার ৪৬ বছর বয়স্ক স্ত্রী মেলানিয়ার সঙ্গে যে আচরণের মধ্যে থাকেন তাও তার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্পকে জোর করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যে চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল এবং তার সমালোচকরা তখন বলেছিলেন, হোয়াইট হাউসে গুরুদায়িত্ব নেয়ার মত ট্রাম্পের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা নেই। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হ্যারল্ড এন বর্নস্টেইন দাবি করেছেন, ধনাঢ্য ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা চমৎকার রয়েছে এবং মেডিকেল রিপোর্ট তাই বলছে।
কিন্তু ট্রাম্পের শরীর ও স্বাস্থ্য নিয়ে পৃথক আরেক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তার ওজন ১৯ স্টোন (১ স্টোন ১৪ পাউন্ড) বেশি। যা ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার একজন বিলিয়নিয়ারের জন্যে অবশ্যই অতিরিক্ত ওজন। বুধবার ড. প্যাট্রিক হেক দাবি করেন, ট্রাম্পের চিকিৎসক মি: বর্নস্টেইনের রিপোর্টটি এমনভাবে তৈরি করেছেন যেন ‘ট্রাম্প পাঁচ মিনিটের জন্যে দাঁড়িয়েছিলেন, ততক্ষণে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে’।
শীর্ষ এই ব্রিটিশ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ‘চিকিৎসক ও রোগীদের সম্পর্ক’ নিয়ে এক মেডিকেল কনফারেন্সে বক্তব্য রাখার সময় ট্রাম্পের স্বাস্থ্য নিয়ে এসব কথা বলেন। মি: হেক বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত চিকিৎসকের রিপোর্ট দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। ৭০ বছর বয়স্ক একজন মানুষের পক্ষে এত বড় নির্বাচনী প্রচারণা, নির্ঘুম রাত এবং যে কঠোর সময়সূচি নির্বাচনের আগের কয়েক সপ্তাহ তাকে মেনে চলতে হয়েছে তার তার হৃদযন্ত্রের ওপর প্রভাব না ফেলে যাবে না।
হেক এও বলেন, ট্রাম্পের যে বয়স তাতে তিনি আরো ১৪ বছর বাঁচতে পারেন। কিন্তু সে জন্যে তাকে পরিমিত বিশ্রাম ও স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। যা হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব পালনের সময় সম্ভব নয় এবং অতিরিক্ত সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ড. হেক জোর দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চিত ট্রাম্প যথেষ্ট হৃদরোগ ঝুঁকিতে রয়েছেন।’
আরেকজন শীর্ষ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. কারেন মর্টন বলেন, মেলানিয়ার সঙ্গে শোবার ঘরে তার যে সম্পর্ক তাও ট্রাম্পের ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলতে পারে। তার ব্যক্তিগত জীবন ও আচরণ অবশ্যই বড় একটি চিন্তার বিষয়। ড. কারেন বলেন, মেলানিয়া ট্রাম্প সুন্দরী ও উচ্চাকাক্সক্ষার এক নারী। ৪৬ বছরের একজন রমণী ট্রাম্পের কাছে যুবতী হিসেবে সুনির্দিষ্ট কিছু চাওয়া পাওয়ার দাবি করতেই পারেন। মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছে সময় ও শক্তি দুটিই কামনা করবেন।
কারেন বলেন, আমরা আশা করি না যে, ট্রাম্প কাজ করতে যেয়ে অতিরিক্ত চাপের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, বা তিনি মৃত্যুর ওপরেই উপবিষ্ট হয়েছেন বা এও বলতে চাই না যে, তিনি ভালবাসতে যেয়ে মারা যান। নির্বাচিত হবার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি মদ্য পান করেন না। তবে তিনি নিয়মিত ব্যায়াম করেন না তা স্বীকার করেন। সূত্র : ডেইলি স্টার ইউ কে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন