ঈদুল আজহার আগে সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার যে দর নির্ধারণ করে দিয়েছিল সেই দরে চামড়া বিক্রি হয়নি। তবে গত কয়েক বছর ধরে চামড়া নিয়ে যে ফেলনা ভাব ছিল সেটা কিছুটা কেটেছে। দাম না পেয়ে চামড়া ফেলে দেওয়ার মতো কোনো খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
এবার সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
রোববার (১০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পোস্তায় দেখা গেছে, ছোট আকারের গরুর চামড়া ২০০–২৫০ টাকায়, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া মানভেদে ৩০০–৭৫০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া ৮০০–১,১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ আড়তদার ছোট আকারের গরুর চামড়া এবং খাসি ও বকরির চামড়া কিনতে অনীহা দেখান। ছোট আকারের গরুর চামড়া কেউ বিক্রি করতে আনলে ১০০ টাকা দামও বলছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে গত কয়েক বছর ঢাকার পোস্তায় চামড়ার বাজারে যে ধস নেমেছিল এ বছর কিছুটা স্বস্তির কথা জানিয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
গত কয়েক বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যেভাবে নাজহাল হয়েছিলেন, এবার তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। দুই পক্ষই কমবেশি তাদের সন্তুষ্টির কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। তবে এবারে পোস্তায় চামড়া কম আসায় সেখানে যে সাড়ে তিনশ আড়তদার আছেন তারা তাদের চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন কি না সে আশঙ্কায় আছেন।
পোস্তায় ভিড় কম হওয়ার পেছনে আড়তদাররা মনে করছেন অনেক চামড়া ব্যবসায়ী নিজেদের সূত্র দিয়ে সরাসরি চামড়া সংগ্রহ করে কিনে ফেলছে। অন্যদিকে সাভার ও হেমায়েতপুরের ট্যানারি ব্যবসায়ীরা নিজস্ব সূত্র থেকে চামড়া সংগ্রহ করছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
পোস্তার আড়তের মালিক মোহাম্মদ সিরাজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এবার ব্যবসা ভালো না। আমরা চামড়া প্রিজার্ভ করতে লবণ রাখসি, লেবার রাখসি। কিন্তু আমাদের এখানে চামড়া আসতেসে না। কোম্পানিগুলো ডাইরেক্ট খরিদ করতেসে। এজন্য আমরা চামড়ার ভালো রেট দিয়েও পাচ্ছি না।’
তবে পশু কোরবানি এখনও পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় পোস্তায় এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি কাঁচা চামড়ার কেনাবেচা। রাতের দিকে পুরোদমে চামড়া কেনাবেচা শুরু বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশে চামড়া ব্যবসায়ীদের কাঁচা চামড়া সংগ্রহের প্রধান মৌসুম ঈদুল আজহা। এক দশক আগেও যেখানে একটি গরুর চামড়া আকারভেদে ১২০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি করা যেত। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সেই একই চামড়া ৫০০ টাকাতেও বিক্রি করতে পারছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পানির দরে না বিক্রি করে অসংখ্য চামড়া ফেলে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন