আরবী ‘মুহাররাম’ শব্দে পাঁচটি বর্ণ আছে। যথা- মীম, হা, রা, রা, মীম। পাঁচ বর্ণবিশিষ্ট ‘মুহাররাম’ শব্দটি আল কুরআনে তিনবার এসেছে। যথা- (ক) আর যদি তারা কারো বন্দি হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তাহলে বিনিময় নিয়ে তাদের ম্্ুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিষ্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৮৫)। (খ) তারা বলে, এসব চতুস্পদ জন্তুর পেটে যা আছে তা বিশেষভাবে আমাদের পুরুষদের জন্য এবং আমাদের মহিলাদের জন্য তা হারাম। (সূরা আনয়াম : আয়াত ১৩৯)। (গ) হে আমাদের পালনকর্তা! আমি নিজের এক সন্তানকে তোমার মর্যাদাবান গৃহের সন্নিকটে চাষাবাদহীন উপত্যকায় আবাদ করেছি। (সূরা ইবরাহীম : আয়াত ৩৭)।
আর ‘মুহাররামান’ আকারে এসেছে একবার। যথা- আপনি বলে দিন, যা কিছু বিধান অহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোনো হারাম খাদ্য পাই না, কোনো ভক্ষণকারীর জন্য যা সে ভক্ষণ করে, কিন্তু মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশত এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ....। (সূরা আনয়াম : আয়াত ১৩৫)।
আর ‘মুহাররামাতুন্’ আকারে এসেছে একবার। যথাÑ বললেন, এ দেশ চল্লিশ বছর পর্যন্ত তাদের জন্য হারাম করা হলো। তারা ভূপৃষ্ঠে উ™£ান্ত হয়ে ফিরবে। (সূরা মায়েদাহ : আয়াত ২৬)
লক্ষ করলে দেখা যায় যে, আরবী মুহাররামান শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৬ এবং আরবী মুহাররামাতুন শব্দের অক্ষর সংখ্যাও ৬। উভয় শব্দের অক্ষর সংখ্যা (৬+৬)=১২। আর মুহাররাম শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৫। উহা আল কুরআনে এসেছে ৩ বার। মোট অক্ষর সংখ্যা দাঁড়ায় (৩দ্ধ৫)=১৫। এখন ১২+১৫ এর যোগফল দাঁড়ায় ২৭। উহার একক (২+৭)=৯। এই ৯ সংখ্যাটি পরিপূর্ণ শক্তির অধিকারী আল্লাহ পাকের সত্তার প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে। কেননা, ‘ইন্নাল্লাহা আলা কুল্লি শাই-ইন্ ক্বাদীর’ আয়াতে এরই সাক্ষ্য প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং মহান রাব্বুল আলামীন মুহাররাম মাসে স্বীয় কুদরতে কামেলার বেশ কিছু নিদর্শন প্রকাশ করে এই মাসের মর্যাদাকে সমুন্নত করেছেন। এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই। তিনি ‘কায়্যালুন লিমা ইউরিদ’ অর্থাৎ যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। তাঁর ইচ্ছার বিপরীতে কিছুই হয় না।
শুধু তাই নয়, আরবী ইসলামী বার মাসের প্রথম মাসটিকে মুহাররাম গুণ বাচক বিশেষণে বিশেষিত করা হয়েছে। যার অক্ষর সংখ্যা ৫। এই ৫ সংখ্যাটি ‘রাহমাতুল্লিল আলাামীন’ বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নাম মোবারক মুহাম্মাদ এবং তাঁর আনীত জীবনব্যবস্থা ইসলাম ও তাঁর জীবনকালের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। বাকি ১১টি মাসের নামের মাঝে এহেন সম্পৃক্ততা পরিসৃষ্ট হয় না। যেমন ‘মুহাম্মাদ’ নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যা ৫। তিনি মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন। আবরী ‘মাক্কাতুন’ শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৪। সুতরাং (৫+৪=৯)। যা পূর্ণ শক্তির প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে। তিনি জাগতিক হায়াত লাভ করেছিলেন ৬৩ বছর। যার একক (৬+৩)=৯। তিনি দু’টি স্থানকে কেন্দ্র করে ইসলাম প্রচার করেছেন। এর একটি হলো ‘মাক্কাতুন’ অক্ষর সংখ্যা ৪ এবং অপরটি হলো ‘মাদিনাতুন’ অক্ষর সংখ্যা ৫। উভয় সংখ্যার একক (৪+৫)=৯। তিনি ২৭টি যুদ্ধে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেছেন। উহার একক (২+৭)=৯। তিনি রজব মাসের ২৭ তারিখের রাতে মীরাজে গমন করেছিলেন। উহার একক (২+৭)=৯। তিনি আল্লাহ পাকের তরফ হতে সর্বশেষ আসমানী কিতাব কুরআন লাভ করেছেন। কুরআন শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৪ এবং মুহাম্মাদ নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যা ৫। উভয় সংখ্যার একক (৪+৫)=৯। অতএব চলমান পৃথিবীর বর্তমান সঙ্কটময়কালে সকল মুমিন মুসলমানের উচিত আল্লাহ পাক প্রদত্ত শামিয়ানা ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করা এবং আল্লাহর পথে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গিত করা। সফলতা লাভের এটাই একমাত্র পথ। ‘ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন