বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি চুক্তির প্রথম ট্রায়াল জাহাজের পণ্য মোংলা বন্দরে আসার পর খালাস সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার (৮ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি রিশাদ রায়হান’ নোঙর করে। বেলা সাড়ে ১১টায় কন্টেইনার ও স্টিল পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়। সেখানে খালাস হওয়া কন্টেইনার ও স্টিল পণ্য নৌযান থেকে সরাসরি টার্মিনাল ট্রাক্টরে উঠানো হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১২টার দিকে পণ্য নিয়ে টার্মিনাল ট্রাক্টরগুলো সড়কপথে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়।
জাহাজের দুটি কন্টেইনারের মধ্যে একটিতে রয়েছে ১৬ টন লোহার পাইপ। সেগুলো খালাসের পর সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয়ে যাবে। অপর কন্টেইনারে রয়েছে সাড়ে ৮ টন প্রিফোম। সেগুলো খালাসের পর কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে আসামে যাবে। এর আগে গত ১ আগস্ট ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে জাহাজটি মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
পণ্য খালাসের সময় মোংলা বন্দর জেটিতে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার ইন্দ্রজিৎ সাগর, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা, মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমানসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্যা ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া (এসিএমপি) চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে এই পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে চুক্তিটি হয়। এরপর নানা জটিলতায় গত চার বছরে এই চুক্তির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। পরে ভারতের পক্ষ থেকে চারটি রুটে ট্রায়েল রানের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তবে আপাতত দুটি স্থলবন্দর দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট দিতে রাজি হয় বাংলাদেশ। তার পরিপ্রক্ষিতেই মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ক চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে চারটি ট্রায়াল রানের প্রথমটি শুরু করেছে কলকাতা বন্দর। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম ট্রায়ালে ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশি নৌযান (কার্গো) ‘এমভি রিশাদ রায়হান’ আসে মোংলা বন্দরে।
এব্যাপারে সিএন্ডএফ এজেন্ট এর সভাপতি মোঃ সুলতান আহম্মেদ জানান, এই পণ্য আসায় শিপিং এজেন্ট,স্টিভিডরস, শ্রমিকসহ সবাই লাভবান হবেন ।
ভারতীয় দূতাবাসের সহকারি হাই কমিশনার ইনডার জিত সাগর জানান, ভারত এখন থেকে মোংলা বন্দর ব্যবহার করবে।তার অংশ হিসেবে ‘ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে ব্যবসায়িক গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনীতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ নিয়াজুর রহমান জানান, ভারত থেকে আসা পন্য গুলো সিলগালা অবস্থায় বাংলাদেশে এসেছে । আমরা সেই সিলগালার উপর আবার সিলগালা লাগাবো এর পর স্থল বন্দর দিয়ে মালামাল ভারতে যাবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে আজ একটি মাইলফলক সৃষ্টি হলো। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ক বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ চুক্তি বাস্তবায়নের ভারতের প্রথম ট্রায়াল জাহাজ মোংলা বন্দরে’।বাণিজ্যে বাংলাদেশের মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষযয়ক চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নে ৪টি ট্রায়াল রানের প্রথমটি শুরু করেছে ভারতের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন