শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

জান্নাত ও জাহান্নামের খোঁজে বিজ্ঞানীরা-০৪

খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাব্বীর আহমেদ উসমানী (রহ.) আয়াতটির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন : পৃথিবীও সাতটি সৃষ্টি করেছেন। যেমন তিরমিজি ইত্যাদি বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোতে সম্ভাবনা রয়েছে যে, দৃশ্যমান হয় না এবং দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কিন্তু লোকেরা সেগুলোকে তারকা মনে করে। যেমন মঙ্গলগ্রহ ইত্যাদি সম্পর্কে বর্তমানে ইউরোপীয় বিজ্ঞানীদের ধারণা, তাতে পর্বতমালা-সাগর এবং আবাদি রয়েছে।

কথা হচ্ছে, হাদিসে ওই পৃথিবীগুলোকে এ পৃথিবীর অধীন বলে যে বিষয়টি বলা হয়েছে, তা হয়তো কোনো অবস্থার প্রেক্ষিতে হতে পারে এবং কোন কোন অবস্থায় ওই পৃথিবী উপরে হয়ে যায়। তবে কথা হচ্ছে, ইবনে আব্বাস (রা.)-এর সেই বর্ণনা নিয়ে, যাতে বলা হয়েছে ‘আদামুহুম-কা আদামিকুম’Ñ অর্থাৎ ওইসব পৃথিবীতে তাদের আদমের ন্যায় তোমাদেরও আদম রয়েছেন। অর্থাৎ ওই পৃথিবীগুলোও আমাদের পৃথিবীর ন্যায়, আমাদের নবীগণের ন্যায় তাদেরও একই নামের নবীগণ রয়েছেন। এতে সপ্ত পৃথিবীর অস্তিত্বের কথা জানা যায়। এসব পৃথিবীর নিম্নদেশে জাহান্নাম অবস্থিত। আল্লাহতায়ালা কোরআন শরীফের সূরা নিসা-এ মুনাফিকদের শাস্তি নির্ধারণ করেছেন জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। তিনি বলেন : নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা রয়েছে দোজখের সর্বনিম্ন স্তরে। (আয়াত : ১৪৫)।

আয়াতে ‘ফিদ্দারকিল আসফাল’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ দোজখের সর্বনিম্ন স্তর। এতে প্রতীয়মান হয় যে, দোজখের অনেকটি স্তর আছে। কোরআনে দোজখের অনেকটি নামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা ‘ত্বোহা’তে তাহ্তাছ-ছারা’ বলা হয়েছে। আদ্র ও ভেজা মাটিকে ছারা বলা হয়, যা মাটি খনন করার সময় নিচ থেকে বের হয়। তফসিরবিদরা বলেন, মানুষের জ্ঞান এই ছারা পর্যন্ত নিঃশেষ হয়ে যায়। এরপর কি আছে তা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না।

এ সম্পর্কে হযরত মওলানা মুফতী শফি (রহ.) এক বৈজ্ঞানিক তথ্য পরিবেশন করেছেন। তিনি লিখেছেন : সমকালীন নতুন গবেষণা, নতুন লেখক ও বিজ্ঞানের চরম উন্নতি সত্ত্বেও মাটি খুঁড়ে এপার থেকে ওপারে চলে যাওয়ার প্রচেষ্টা বহু বছর ধরে চালানো হয়েছে এবং এসব গবেষণা ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলাফল পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ছয় মাইল গভীর পর্যন্ত এসব যন্ত্রপাতি কাজ করতে সক্ষম হয়েছে। এর নিচে এমন প্রস্তর সদৃশ স্তর রয়েছে, যেখানে খনন কাজ চালাতে সকল যন্ত্রপাতি ও আধুনিক বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনাও ব্যর্থ হয়েছে। মাত্র ছয় মাইলের গভীরতা পর্যন্তই মানুষ জ্ঞান লাভ করতে পেরেছে।

অথচ মৃত্তিকার ব্যাস হাজার মাইল। তাই একথা স্বীকার করা ছাড়া গতান্তর নেই যে, পাতালের জ্ঞান আল্লাহতায়ালারই বিশেষ গুণ। হযরত মুফতী শফি (রহ.) সূরা আন-নাজম এ ঘটনার কিছুটা বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করেছেন। তিনি লিখেছেন : ‘বর্তমান যুগে পাশ্চাত্যের অনেক বিশেষজ্ঞ মৃত্তিকা খনন করে ভূগর্ভের অপর প্রান্তে যান্ত্রিকতার প্রচেষ্টা বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত রেখেছে। তারা বিকল্প অনেক যস্ত্রপাতি এ কাজের জন্য আবিষ্কার করেছে। যে দল এ কাজে সর্বাধিক সাফল্য অর্জন করেছে,তারা মেশিনের সাহায্যে ভূগর্ভের অভ্যন্তরে ছয় মাইল গভীর পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে।

এরপর শক্ত পাথরের এমন একট স্তর বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে যার কারণে তাদের খনন কার্য এগুতে পারেনি। তারা অন্য জায়গায় খনন আরম্ভ করেছে। কিন্তু এখানেও ছয় মাইলের পর তারা শক্ত পাথরের সম্মুখীন হয়েছে। এভাবে একাধিক জায়গায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ছয় মাইলের পর সমগ্র ভূপৃষ্ঠের উপর এমন একটি কঠিন শক্ত আবরণ রয়েছে, যাতে কোনো মেশিন কাজ করতে সক্ষম নয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) জাহান্নামের যে চার প্রাচীরের কথা উল্লেখ করেছেন, খননকারীদল সম্ভবত সেই প্রাচীর পর্যন্ত গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে। জাহান্নামের প্রাচীর ফুটা করা কারোর পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহর নির্দেশে তা একসময় বিদীর্ণ হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
আলি ২০ আগস্ট, ২০২২, ৯:৫৪ এএম says : 0
বিজ্ঞানীরা আস্তে আস্তে আল্লাহর নিয়ম কানুন সম্পর্কে সব জানতে পারবে
Total Reply(0)
আমান ২০ আগস্ট, ২০২২, ৯:২৭ এএম says : 0
বিজ্ঞানীরা একটা সময় আল্লাহর বিধি বিধান সম্পর্কে সবই জানতে পারবো
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন