নীলফামারী সৈয়দপুরে তীব্র তাপদাহ ও বিদ্যুতের লোডশেডিং বিষিয়ে তুলেছে জনজীবন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে চলছে তীব্র তাপদাহ সাথে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। বিদ্যুতের সরবরাহ চাহিদার সিকি ভাগও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ঘন্টায় ঘন্টায় লোড শেডিংয়ের ধকলে শিল্প কারখানাসহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সহসা লোডশেডিং থেকে মুক্তি মিলছে না। বরং লোডশেডিং আরও ভয়াবহ হতে পারে। ভাদ্রের অব্যাহত তাপপ্রবাহে এ অঞ্চলের জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে গোটা জনপদ তপ্ত হয়ে উঠেছে। দুঃসহ গরমে কাহিল হয়ে পড়েছে মানুষ। স্বস্তির জন্য তরমুজ, বেল, আখের রস ও লেবুর কদর বেড়ে গেছে। চিকিৎসকরা গরম থেকে বাঁচতে শীতল স্থানে থাকা এবং অতিরিক্ত পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন। অন্যথায় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তারা। প্রচন্ড গরমের কারণে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে জ¦র, সর্দি ও কাশিসহ বিভিন্ন রোগ-বালাই। বিরূপ আবহাওয়ার জন্য ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। একই সঙ্গে মশা-মাছির উপদ্রবও বেড়েছে আশংকাজনক হারে। তীব্র তাপদাহে মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে কম। দুপুরে অনেকটা ফাঁকা হয়ে পড়ছে শহরের সড়কগুলো। গরমে কাজ করতে গিয়ে শ্রমজীবী মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। কষ্ট হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের। খরতাপে মাঠ-ঘাট, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। দুর্বিষহ গরমে প্রাণীকুলের অবস্থাও নাজুক হয়ে পড়েছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গ্রামাঞ্চলে বাঁশঝাড় শুকিয়ে যাচ্ছে। ঝাড় বাঁচাতে অনেক গৃহস্থ পানি সেচ দিচ্ছেন। এদিকে বৈরী আবহাওয়া ও অসহ্য গরমে জনজীবনে যখন ত্রাহী অবস্থা চলছে, তখনই শুরু হয়েছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড শেডিংয়ের । দিনে-রাতে যখন-তখন বিদ্যুৎ যাওয়া আসার খেলায় মেতেছে। দিনে রাতে মিলিয়ে প্রায় ১২ ঘন্টা লোড শেডিং করা হচ্ছে। সৈয়দপুরে বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ২৫ মেগাওয়াট। অথচ চাহিদা থাকলেও সরবরাহ দেয়া হচ্ছে মাত্র ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ফলে ঘন ঘন লোড শেডিং হচ্ছে। ভয়াবহ লোড শেডিংয়ের কারণে বিসিক শিল্প নগরীসহ ছোট-বড় শিল্প কারখানার উৎপাদন চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এতে প্রতিদিন কর্মঘন্টার অপচয় হচ্ছে শিল্প মালিকদের। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে কলকারখানায়। বিদ্যুৎ দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বেসরকারী খাতের বিদ্যুৎ প্লান্ট থেকে বাড়তি বিদ্যুৎ মিলছে না। এ ছাড়া সৈয়দপুর ২০ মেগাওয়াট, ফুলবাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ঠাকুরগাঁওয়ে ৫০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট থেকেও বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়। এ দুরাবস্থা থেকে নিস্তার পেতে আরও সময় লাগবে বলে একই সূত্রে জানা গেছে।
(২২ আগস্ট) সোমবার সৈয়দপুর বণিক সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী ও উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুস সবুর আলম জানান স্মরণকালের তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন