বিয়ে ছাড়াই স্কুল পড়ুয়া কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদান ঘটনার মধ্যস্থতা করেছেন হাইকোর্ট। উভয় পরিবারের সম্মতিতে কিশোর-কিশোরীর বিয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে যশোর কিশোর সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে সার্বিক সহযোগীতা করতে বলা হয়েছে।
গতকাল রোববার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম এবং বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলে ও মেয়ে শিশু সন্তান জন্ম দেয়। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করলে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে ছেলেটিকে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেয়। কিশোরের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার।
গতকালের আদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, বাচ্চা দু’টির অভিভাবক বিয়ের বিষয়ে তাদের সম্মতির কথা আদালতের কাছে বলেছেন। তখন আদালত বলেছেন, দুইজনই অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক। কিন্তু তাদের সন্তান হয়েছে। এ কারণে দুই পরিবার বিয়ে করানোর উদ্দেশ্যে যশোর শিশু সংশোধনাগারে গেলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করতে বলেছেন বিয়ের পর আদালতকে প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলা হয়েছে। পরে আদালত শিশু ছেলের মুক্তির বিষয় বিবেচনা করবেন। এর আগে রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদান ও সন্তান জন্মের পরও তাদের বিয়ে না হওয়ার ঘটনায় অভিভাবকদের তলব করেন হাইকোর্ট।
গত ১০ আগস্ট কিশোর আসামির জামিন শুনানিকালে একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ সময় কিশোরের আইনজীবী সেলিনা আক্তার বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী মো. লাল মিয়ার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে মেয়েটির বাবা হাবিবুর রহমান। এজাহারে বলা হয়, তার কিশোরী মেয়ে ক্লাস নাইনে পড়ে। দেড় বছর আগে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লাল মিয়ার ছেলে প্রেমের সম্পর্ক করে। এমনকি ২০২১ সালের ১ অক্টোবর মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। এর ফলে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়। গত ২৫ মে পরীক্ষা করে কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে ১ জুন পীরগাছা থানায় কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়। মামলায় গ্রেফতার করা হয় ওই কিশোরকে। বর্তমানে সে যশোর শিশু সংশোধনাগারে রয়েছে। এদিকে, গত ঈদুল আযহার দু’দিন পর কিশোরী সন্তান প্রসব করে। বিয়ে না হওয়ায় সন্তান বাবার স্বীকৃতি পায়নি। অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার বলেন, ছেলেপক্ষ কিশোরীর বাবার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছে। কিশোরীকে বিয়ে করে সন্তানের দায়িত্ব নিতে তার পরিবার রাজি। কিন্তু স্থানীয় গ্রাম্য প্রধান, চেয়ারম্যান-মেম্বারের প্ররোচনায় কিশোরীর বাবা টাকা ও তিন বিঘা জমি দাবি করে। যার কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি। বিষয়টি আমরা আদালতে কিশোর আসামির জামিন শুনানির সময় বলেছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন